২০১৫ সালের রবিনসন স্ট্রিটের কথা মনে আছে? বাবা ও দিদির কঙ্কালের সঙ্গে বাস করছিলেন পার্থ দে। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল দুটি কুকুরের কঙ্কালও! ওই ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা বাংলা তথা দেশকে। এরপরে এইধরনের ঘটনা একাধিকবার সামনে এসেছে। কখনও সন্তানের মৃতদেহের সঙ্গে মায়ের বাস তো কোথাও এক সপ্তাহ ধরে দাদার মৃতদেহ আগলে বসে থাকা।
তবে প্রতিটি ঘটনাতেই মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ থেকে মাস খানেকের মধ্যে বিষয়টি সামনে এসেছে। এবার এমন একটি ঘটনা সামনে এল, যা শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বইয়ে দেবে। সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হল বন্ধ বাড়ি থেকে। জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা বিগত ৫ বছর ধরে ভাইয়ের মৃতদেহের সঙ্গে বসবাস করছিলেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম মেলবোর্নের অত্যন্ত অভিজাত এলাকা নিউটাউন। সেখানেরই রাসেল স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সত্তোরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পুলিশ। দুর্গন্ধে সেই বাড়িতে ঢোকা দায় ছিল। ফরেন্সিক অফিসাররা বায়োহ্যাজার্ড স্যুট পরেই ঘরে প্রবেশ করেন। গোটা বাড়িই আবর্জনায় পরিপূর্ণ ছিল। ঘরের ভিতরে মরা ইঁদুর থেকে শুরু করে পসাম, এমনকী বৃষ্ঠাও উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, হয়তো মরা ইঁদুর-পসাম থেকেই পচা দুর্গন্ধ আসছে, কিন্তু শোওয়ার ঘরে ঢুকতেই আঁতকে ওঠেন তারা। দেখেন, বিছানায় রাখা কঙ্কাল।
পরে জানা যায়, ওই কঙ্কালটি বৃদ্ধার ভাইয়ের। বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল কোনও কারণে। ভাইয়ের মৃতদেহ সত্কার না করে তাঁর সঙ্গেই বসবাস করছিলেন বৃদ্ধা। তাও আবার এক-দু’সপ্তাহ নয়, একটানা পাঁচ বছর। বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রতিবেশীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়ায়। অনেকেই অভিযোগ করেন যে বিভিন্ন সরকারি দফতরে দুর্গন্ধ নিয়ে অভিযোগ জানালেও, কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৮ সালে শেষবার দেখা গিয়েছিল ওই বৃদ্ধার ভাইকে। তাঁরা কী করত, সে সম্পর্কেও কেউ জানতেন না। বৃদ্ধাও খুব একটা বাড়ির বাইরে না আসায়, সবাই ধরে নিয়েছিলেন যে দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়ি ফাঁকাই পড়ে আছে। ২০২২ সালে ভিক্টোরিয়া পুলিশ ফাঁকা বাড়িগুলিতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন। উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় ওই বৃদ্ধাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।