দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। বর্তমানে এ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে টান টান উত্তেজনা। এ পরিস্থিতিতে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ইস্যু। এই সময়ে দল ভাঙা গড়ার খেলাও শুরু হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি।
তিনি সম্প্রতি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, এ মুহূর্তে রাজনীতিতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীনরা যাই করুক না কেন, দেশ ও জাতির জন্য বেদনাদায়ক হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে মেজর হাফিজ কেন্দ্র করে যেসব বক্তব্যে এসেছে, তার সূত্রপাত হয়েছে— তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে কেন্দ্র করে। তথ্যমন্ত্রী বলেছিলেন— মেজর (অব.) হাফিজের নেতৃত্বে আরেকটি দল আসছে। গত ৮-১০ বছর ধরে বিএনপিকে ভাঙার জন্য নানা চেষ্টা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে বিকল্প বিএনপি, তৃণমূল বিএনপি ও এলডিপিসহ অনেক দল তৈরি করেছে।
বিশেষ করে বিএনপির যারা ত্যাগী নেতা, হয়তো বিভিন্ন কারণে দল থেকে একটু দূরে আছেন তাদের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে সরকার। অথবা দলীয় প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নেই বলে বিভিন্ন প্রচার বা প্রপাগান্ডা চালিয়ে তাদের টার্গেট করছে সরকার।
এরই অংশ হিসেবে মেজর হাফিজকে নেতা বানিয়ে একটি নতুন দল গঠন করে অথবা বিএনপির যে অভ্যন্তরীণ একটি ক্যু সেটিকে কাজে লাগিয়ে তারেক রহমানকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা, বেগম জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা এবং পুরো বিএনপির নেতৃত্ব থেকে জিয়া পরিবারকে আউট করে সাময়িক কিছু অর্জন করার চেষ্টায় লিপ্ত সরকার। এটি নিয়ে হয়তো অনেকে কাজ করছে এবং পরিকল্পনা করছে।
সাবেক এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে দল ভাঙা, দল গড়া এবং দুঃসময়ে দলের নেতৃত্বে শীর্ষ পর্যায় থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত অতীতেও হয়েছে। আমরা সেটি দেখে এসেছি। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এরশাদের সময়েও হয়েছে। পরে আবার এরশাদ সাহেবকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে লাঞ্ছিত করা, পরিবারের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে বিভেদ সৃষ্টি করা।
দলের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ করা। এ কাজগুলো করে এরশাদকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বলা যেতে পারে—এগুলো রাজনৈতিক অপচেষ্টায় হয়েছিল। শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টিকে নিয়ে এখনো সে খেলাগুলো চলমান রয়েছে। একইভাবে জামায়াতকে ভাঙারও চেষ্টা করেছে সরকার। সেখান থেকে বেরিয়ে একটি গ্রুপ এবি পার্টি করেছে।
এবার এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে মেজর হাফিজকে নিয়ে ভয়ঙ্কর খেলা খেলছে সরকার। সে খেলায় মেজর হাফিজ কতটা অসহায়! তার ওপর কতটা চাপ আছে, তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তার চোখেমুখে সেটি ফুটেও উঠেছে।
কর্নেল অলি বিএনপি থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করেছিলেন। সরকারের বিপক্ষে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। ফলে তারও দলটাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এগুলো অপচেষ্টা খুব একটা কাজে আসবে বলে মনে করেন না রনি।