বৈবাহিক সম্পর্ক মধুর ছিল না মোটেও। নিয়মিত মারধর, মানসিক নির্যাতন চালাত স্বামী। সেই দাম্পত্যের পরিণতি হয়েছিল আরও ভয়ঙ্কর। স্ত্রীর কর্মক্ষেত্রে গিয়ে তাঁকে ১৭ বার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছিল স্বামী। তারপর সেই ক্ষতবিক্ষত দেহের উপর দিয়ে বারবার গাড়ি চালিয়ে এদিক-ওদিক করেছিল, যতক্ষণ না তাঁর শরীর থেকে প্রাণের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যায়। ৩ বছর আগের সেই হত্যাকাণ্ডের শুনানি শেষে ভারতীয় 'স্বামী'কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি আদালত।
অভিযুক্তের নাম ফিলিপ ম্যাথু। তাঁর স্ত্রী মেরিন জয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতেন। ২০২০ সালে স্ত্রীর কর্মক্ষেত্রে ঢুকে তাঁকে খুন করেছিল ম্যাথু। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি নিয়ে এসে মেরিনের পথ আটকে দাঁড়িয়েছিল অভিযুক্ত। তারপর ছুরি দিয়ে অন্তত ১৭ বার কোপায় তাঁকে। এরপর ফের গাড়িতে উঠে স্ত্রীর রক্তাক্ত শরীরের উপর দিয়ে বারবার গাড়ি চালিয়ে তাঁকে পিষে দেয় ম্যাথু।
মেরিনের সহকর্মীরা জানিয়েছিলেন, ম্যাথু 'স্পিড ব্রেকার'-এর মতো করে মেরিনের শরীরের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়েই যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৬ বছর বয়সি মেরিনের। মৃত্যুর আগে তরুণী শুধু একটাই কথা বলতে পেরেছিলেন, 'আমার একটা বাচ্চা আছে।'
সেই ঘটনায় টানা ৩ বছর ধরে মামলা চলার পর অভিযুক্ত ম্যাথু দোষী প্রমাণিত হয়েছে। জানা গেছে, মেরিন ভয়ঙ্কর দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন। তাই তাকে শাস্তি দিতেই খুন করেছিল ম্যাথু। ফ্লোরিডার আদালত ম্যাথুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে। যদিও তার মৃত্যুদণ্ড হওয়ারই কথা ছিল। তবে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে না বলে জানিয়েছিল অভিযুক্ত। তাই শেষমেশ মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে তাকে।
মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন মেরিনের পরিবার। তবে শেষমেশ যে তাঁর হত্যাকারীর সাজা হয়েছে, সেকথা জেনে একটু হলেই শান্তি পেয়েছেন তাঁরা।