২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৬:২৫:৪১ পূর্বাহ্ন


গড়ে দুই টুকরো রুটি খেয়ে বেঁচে আছেন গাজাবাসী: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১১-২০২৩
গড়ে দুই টুকরো রুটি খেয়ে বেঁচে আছেন গাজাবাসী: জাতিসংঘ


তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। সেখানে খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরাইলের সর্বাত্মক অবরোধের কারণে গড়ে মাত্র দুই টুকরো পাউরুটি খেয়ে গাজাবাসী বেঁচে আছেন।

জাতিসংঘের বরাত দিয়ে শনিবার (৪ নভেম্বর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
 
অবরুদ্ধ গাজায় খাবার, পানি এবং জ্বালানির সীমিত মজুত এবং ইসরাইলি অবরোধে চরম মানবেতর সময় কাটছে গাজাবাসীর। অসহায় গাজাবাসী এখন পানির অভাবে চিৎকার করে কাঁদছে। বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ সহায়তা পেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই অপর্যাপ্ত।
 
জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজিসের (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালক থমাস হোয়াইট বলেন, টানা ২৯ দিন ধরে ইসরাইলের নির্বিচারে বোমা হামলায় গাজা উপত্যকা এখন মৃত্যুপুরী। গাজার কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়।
 
এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) ১৭ লাখ গাজাবাসীকে রুটির যোগানের লক্ষ্যে প্রায় ৮৯টি বেকারিকে সহায়তা দিচ্ছে। এখন এই অঞ্চলের মানুষরা রুটির বদলে একটু পানির খোঁজে আছেন।
 
জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপসমন্বয়ক এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মানবিক সমন্বয়কারী লিন হেস্টিংস বলেন, ‘ইসরাইলের তিনটি পানি সরবরাহ লাইনের মধ্যে মাত্র একটি চালু আছে। তাই অনেকে লবণাক্ত বা লবণাক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছে।’
 
এদিকে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতির জন্য ইসরাইল, মিশর, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং পানি ও বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য জ্বালানি জরুরি।’
 
ইউএনআরডব্লিউএ'র ১৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে গাজার প্রায় ছয় লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই স্কুল। কিন্তু গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরাইলের তীব্র স্থল ও বিমান হামলায় সংস্থাটির উত্তর গাজার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
 
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৯৯ জনে। নিহতদের মধ্যে ৯ হাজার ১৫৫ জনই গাজার এবং বাকি ১৪৪ জন ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরের। এছাড়া, ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ২৬ হাজার ২০০ জন। আহতদের মধ্যে ২৪ হাজার জন গাজার অধিবাসী, বাকিরা পশ্চিম তীরের। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরাইলের দেড় হাজারের বেশি নিহত হয়েছে।