২০ মে ২০২৪, সোমবার, ০২:৪১:১৬ অপরাহ্ন


ইজরায়েলি হানায় নিহত টিভি কর্মীর পরিবারের ১৯ জন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১১-২০২৩
ইজরায়েলি হানায় নিহত টিভি কর্মীর পরিবারের ১৯ জন ছবি: সংগৃহীত


জাবালিয়ার পর ফালুজা। সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের মৃত্যুমিছিল অব্যাহত গাজা ভূখণ্ডে।

কাল জাবালিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাজার ফালুজায় শরণার্থী শিবিরকে নিশানা করল ইজরায়েল। কাতারের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আজ ফালুজায় বেশ কয়েকটি বসতবাড়িতেও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইজরায়েলের বোমারু বিমানগুলি।

গতকাল জাবালিয়ায় ইজরায়েলি হামলায় কাতারের ওই সংবাদমাধ্যমটির এক কর্মীর পরিবারের ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আজ বেশ কয়েক ঘণ্টা গাজায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিল ইজরায়েল। প্যালেস্টাইন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অন্তত ৪০০ জন বিদেশি আজ গাজা থেকে মিশরে গিয়েছেন। কমিটি টু প্রোটেকট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, চলতি সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্যালেস্টাইনের ২৬ জন, লেবাননের ১ জন নিহত হয়েছেন ইজরায়েল বাহিনীর আক্রমণে। হামাসের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন সাংবাদিক। ইজরায়েলের সেনাবাহিনী সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং এএফপি-কে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব তারা নেবে না।

গাজায় স্থলযুদ্ধে এখনও তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেনি ইজরায়েলি বাহিনী। ফলে গত কাল থেকেই বিমান হানা জোরদার করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। গত কাল জাবালিয়ায় শরণার্থী শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কাতারের ওই টেলিভিশন চ্যানেলটি আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত কালের ইজরায়েলি হামলায় তাদের সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ আবু-আল-কুমসান তাঁর বাবা, ভাই, দুই বোন, ভাইপো, ভাইঝি-সহ পরিবারের ১৯ জনকে হারিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তাঁরা যেন মহম্মদ আবু আল-কুমসান এবং গাজার নিরপরাধ নাগরিকদের পরিবার, যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে, তাদের জন্য ন্যায়বিচারের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে এই গুরুতর অবিচারের সমাধান করেন'। ফালুজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানায়নি গাজা প্রশাসন। হামাস আজ দাবি করেছে, গাজা সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা করলে তিন জন ইজরায়েলি সেনা সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন।

প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আজ জানানো হয়েছে, সংঘাতের জেরে এখনও পর্যন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ছুঁতে চলেছে। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি শিশু ও মহিলা। আহতের সংখ্যা অন্তত ২১ হাজার। অবরুদ্ধ গাজায় চিকিত্‍সা সঙ্কট তীব্র আকার নিচ্ছে। চিকিত্‍সা সরঞ্জাম এবং ওষুধপত্র ক্রমেই কমে আসছে। গত ৭ অক্টোবর সংঘর্ষ শুরু আগে রাফা সীমান্ত দিয়ে দিনে ৫০০ ট্রাক পণ্য নিয়ে গাজায় প্রবেশ করত। কিন্তু গত ২১ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে দেড়শোরও কম। সূত্রের খবর, রাফা সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৮০ জন আহত গাজাবাসীকে চিকিত্‍সার জন্য মিশরের সীমান্ত লাগোয়া শহরগুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্যালেস্টাইনের সীমান্ত কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ৪০০ জন বিদেশি গাজা থেকে মিশরে গিয়েছেন। যদিও মিশরের তরফে জানানো হয়েছে, প্যালেস্টাইনের উদ্বাস্তুদের তারা আশ্রয় দেবে না। কারণ, যুদ্ধের পরে শরণার্থীদের আর গাজায় ফিরতে দেবে না ইজরায়েল।

গাজায় আজ সকাল থেকে বহু ক্ষণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা অচল হয়ে পড়ে। গাজার একটি টেলিকম সংস্থা জানায়, দুপুর থেকে পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে।