২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:৪৯:০১ পূর্বাহ্ন


সাপাহারে দিবালোকে জখম করে প্রায় কোটি টাকা লুটের অভিযোগ! গ্রেফতার ২
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-১০-২০২৩
সাপাহারে দিবালোকে জখম করে প্রায় কোটি টাকা লুটের অভিযোগ! গ্রেফতার ২ সাপাহারে দিবালোকে জখম করে প্রায় কোটি টাকা লুটের অভিযোগ! গ্রেফতার ২


নওগাঁর সাপাহারে মনিরুল ইসলাম (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে মেরে রক্তাক্ত জখম করে প্রায় কোটি টাকা লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।

এছাড়াও মনিরুলের স্ত্রী সরকার রেজওয়ানা শারমিনের শ্লীলতাহানি ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলার মধইল বাজারে ঘটনাটি ঘটে।

 আহত মনিরুল মধইল বাজার সমিতির সভাপতি ও মনির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বলে জানা গেছে। এঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায়  সরকার রেজওয়ানা শারমিন বাদী হয়ে থানায় ১০ জনকে সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭ জনকে আসামি করে একটি এজাহার দাখিল করলে ২ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। 

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১ অক্টোবর মধুইল গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের নিকট মধুইইল বাজারে একটি আড়ৎঘর ভাড়া নেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে মামুনের নিকট হইতে ভাড়া গ্রহণ করেন মনিরুল ইসলাম যার মেয়াদকাল চুক্তি হয় ৫বছরের জন্য(২০২১-২৫)। ৩শ' টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের সম্মতিতে উক্ত চুক্তিনামা স্বাক্ষরিত হয়। যার উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষীদের মধ্যে অন্যতম মধইল বাজারের জনৈক ইব্রাহিম হোসেন। উল্লেখিত আড়ৎঘরের ভাড়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এজাহারে উল্লেখিত ১ নং বিবাদী ইব্রাহিম হোসেন গত ২৭ অক্টোবর ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলামকে ঘর ছেড়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এবং শাসিয়ে বলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘর ছেড়ে দিতে হবে। 

পরেরদিন (২৮ অক্টোবর)  সকাল ৯ টার দিকে ব্যবসায়ী মনিরুলের আড়তের ম্যানেজার আড়ত ঘর খোলে। এসময় ম্যানেজারের কাছে ফিড কেনার জন্য নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা ছিলো। ঘর খোলার সাথে সাথেই এজাহার নামীয় বিবাদীগণ দলবদ্ধ হয়ে আড়তে অনধিকার প্রবেশ করে ম্যানেজারকে জোরপূর্বক আটকিয়ে রাখে। যা তাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিলো বলে উল্লেখ রয়েছে। এমতাবস্থায় মনিরুলের স্ত্রী সরকার রেজওয়ানা শারমিন এজাহারে উল্লেখিত স্বাক্ষীদের সহায়তা নিয়ে ম্যানেজারকে উদ্ধার করে। এসময় ম্যানেজারের নিকট ফিড কেনার নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা সহ ইসলামী ব্যাংক থেকে নেওয়া সিসি ঋণে জমা দেওয়ার জন্য নগদ ৫০ লাখ টাকা ওই আড়তে সংরক্ষিত ছিলো। যা এজাহারে বর্ণিত ২ নং আসামী ও ইব্রাহিমের সহোদর নাজির উদ্দিন লুট করে নেয়। এসময় চরম বাকবিতন্ডা শুরু হলে বিবাদীগণ আড়তে থাকা ফিডের বস্তা, হিসাবের খাতা, ল্যাপটপ বাইরে সড়কে ছুঁড়ে ফেলে। যাতে করে আরো প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসময় ব্যবসায়ী মনিরুলের স্ত্রী সরকার রেজওয়ানা  শারমিন বাধা প্রদান করতে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে চেয়ার দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে। যার ফলে তার পিঠে ও বুকে ছিলা ফোলা জখম হয়। এছাড়াও তার পরনের কাপড় ধরে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বিবাদীরা। এমতাবস্থায় তার স্বামী মনিরুল ইসলাম খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ২ নং বিবাদী নাজির উদ্দিন তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে। সে আঘাত প্রতিহত করতে গিয়ে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে লেগে রক্তাক্ত জখম হয় মনিরুল। এসময় অন্যান্য বিবাদীরা নিজেদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মনিরুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে ডান চোখের নিচে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিতে দিতে স্থান ত্যাগ করে। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 

এবিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ন কবীরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন " এ বিষয় নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।"