২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৩৫:৩১ পূর্বাহ্ন


সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১০-২০২৩
সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী


বড় দুই দলের আজকের মহাসমাবেশ ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নাশকতার আশঙ্কা করেছে। এ কারণে রাজধানীতে থানায় থানায় তল্লাশি ও আটক করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত অর্ধ লক্ষাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। কেউ কেউ মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি। 

 

একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে সতর্ক করে বলেছে, এই সমাবেশ ঘিরে স্বার্থান্বেষী মহল, জঙ্গি সংগঠনসহ একাধিক সংগঠন আত্মঘাতী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজপথে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের চার কর্মী নিহত হয়। এই ধরনের কর্মসূচি ঘিরে কথিত লগি-বইঠা দিবসের পালটা প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে জামায়াতসহ একাধিক জঙ্গি সংগঠন। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, মহাসমাবেশ ঘিরে যাতে কেউ নাশকতা করতে না পারে সেজন্য রাজধানীসহ দেশব্যাপী কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি ঢেলে সাজানো হয়েছে।

সচিবালয়, কূটনৈতিকপাড়া, মতিঝিল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এলাকাসহ দুই দলের মহাসমাবেশের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যাতে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে দ্রুত নজরে পড়ে এবং তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সমাবেশের প্রবেশ পথগুলোতে সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকবে। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ২৫ সহস্রাধিক সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, আর্মড ব্যাটালিয়ান মোতায়েন থাকছে। পাঁচ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আরো ২০ প্লাটুন বিজিবি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজধানীতে সর্বোচ্চ গোয়েন্দা নজরদারি থাকছে। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন এলাকায় র?্যাবের বিশেষ টহল চলমান। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ঢাকার প্রবেশমুখে বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে রয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসার সদস্যরাও।

ঢাকার টঙ্গী, আমিনবাজার, কেরনীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কাঁচপুর ব্রিজ, ডেমরা ব্রিজ, বাবুবাজার ব্রিজ, পোস্তগোলা ব্রিজসহ ঢাকার প্রবেশের সকল সড়ক পথ, নৌপথে তল্লাশি চলছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করা হচ্ছে। এছাড়া বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বাস টার্মিনাল, নৌ-টার্মিনাল ও রেলস্টেশন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যাতে বাইরে থেকে এসে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারেন। রাজধানীর সড়কে চেকপোস্ট জোরদারের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল ও সন্দেহজনক জায়গায় নজরদারি শুরু হয়েছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলোতেও সতর্ক অবস্থানে থেকে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিরাপত্তাসহায়তা দিতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের। কিন্তু সমাবেশ ঘিরে যে কোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কঠোর থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে রাজধানী জুড়ে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। একই দিনে দুই দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি করতে পারে, এমন ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বড় দুই দলের মহাসমাবেশ সামনে রেখে সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। যে কোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানী সর্বোচ্চ কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনিতে রয়েছে। ২৫ সহস্রাধিক মেট্রোপলিটন পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি ও আনসার থাকবে। সকল গোয়েন্দা ইউনিটও সতর্কাবস্থায় থাকবে। কোনো নাশকতার চেষ্টা হলে কঠোর হাতে দমন করা হবে