অনেকেই নিজের বাড়ির পোষ্যদের সন্তান স্নেহে বড় করে তোলেন। ঠিক যেমনটা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পার্থের বাসিন্দা নিকিতা পিল নামে এক যুবতী। কিন্তু সন্তান স্নেহে বড় করে তোলা সেই পোষ্যরাই যে তার উপরে প্রায় প্রাণঘাতী হামলা চালাবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি ৩১ বছর বয়সি নিকিতা।
পোষ্য দুই রটওয়েইলার প্রজাতির কুকুরের আক্রমণে প্রায় প্রাণ যেতে বসেছিল তাঁর। বর্তমানে পার্থের একটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন নিকিতা। পোষা দুই সারমেয় নিকিতার সারা শরীরে এমন ভাবে কামড়েছে যে তাঁর একটি হাত বাঁচানোই এখন চিকিত্সকদের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নিকিতার কাছে ব্রনস এবং হারলেম নামে দুটি রটওয়েইলার প্রজাতির কুকুর ছিল। তাদেরকে নিজের সন্তান বলেও সমাজমাধ্যমে পরিচয় দিতেন ওই তরুণী। দিন কয়েক আগে আচমকাই ওই তরুণীর আর্ত চিত্কার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। সঙ্গে সঙ্গেই নিকিতার বাড়িতে ছুটে যান তাঁরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে চোখের সামনে যে দৃশ্য তাঁরা দেখেন, তাতে আঁতকে ওঠেন প্রত্যেকেই।
প্রতিবেশীরা দেখেন, হিংস্র ভাবে নিকিতার উপরে আক্রমণ করেছে তাঁরই পোষা দুটি কুকুর। কামড়ে নিকিতার গোটা শরীর কার্যত ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে রটওয়েইলার প্রজাতির কুকুর দুটি। নিকিতাকে বাঁচাতে কুকুর দুটিকে কোনওক্রমে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রতিবেশীরা। পাইপ দিয়ে জল ছিঁটিয়ে, ব্যাট দিয়ে আঘাত করে কুকুর দুটিকে সরানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি।
শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে পুলিশ এসে একটি কুকুরকে গুলি করে মারে। অন্য কুকুরটিকে আটক করা হয়েছে। যে কুকুর দুটি নিকিতার এই অবস্থা করেছে, তার ব্রনস নামে নিজের পোষ্যের জন্মদিনে ২০১৭ সালে নিকিতা সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘এমন বিশ্বস্ত, বুদ্ধিমান, আগলে রাখা বন্ধু পেয়ে আমার আর কিছু চাই না। তুমিই তো আমার জগত্।’
যে বিক্রেতা ওই দুটি কুকুরের মধ্যে একটি নিকিতাকে বিক্রি করেছিলেন, তাঁর অবশ্য দাবি কোনও কারণ ছাড়া রটওয়েইলার প্রজাতির কুকুর কাউকে আক্রমণ করবে না। তাঁর দাবি, হয়তো বা কোনও কারণে দুটি কুকুরের মধ্যে মারামারি হচ্ছিল। আর তাদের ছাড়াতে িগয়েই দুই সারমেয়র রোষের কবলে পড়ে যান নিকিতা নিজেই!