২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৪:৩২:৩৪ পূর্বাহ্ন


একই ফ্রিজারে ৫ বছর ধরে স্ত্রীর লাশ ও খাবার!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৯-২০২৩
একই ফ্রিজারে ৫ বছর ধরে স্ত্রীর লাশ ও খাবার! ফাইল ফটো


২০১৮ সালে ক্যান্সারে মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রীর। তারপর প্রায় পাঁচ বছর ধরে একটি ফ্রিজারেই স্ত্রীর দেহ রেখে দিয়েছিল তাঁর স্বামী। শুধু তাই নয়, ওই একই ফ্রিজারে সে তার নিজের খাবার-দাবারও রাখত বলে অভিযোগ। আসল উদ্দেশ্য ছিল, স্ত্রীর নামে পেনশন তোলা। স্ত্রীকে জীবিত দেখিয়ে, তাঁর নাম ব্যবহার করে আয়করে ছাড় পাওয়া।

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম থেকে প্রায় ৩৪০ কিলোমিটার পশ্চিমের শহর আরজাং-এ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তার এই জালিয়াতি ধরা পড়ে গিয়েছে। চলতি সপ্তাহের সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সুইডেনের এক আদালত ৫৭ বছর বয়সী ওই নরওয়েইয়ান নাগরিককে প্রতারণা এবং সরকারি রেকর্ডে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার দায়ে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন ওই মহিলা। ২০১৮ সালে ৬০ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু, মহিলার বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সেই সম্পর্কে কিচ্ছু জানতে দেয়নি তাঁর স্বামী। দেহটি তিনি একটি ফ্রিজারে রেখে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই ভাবে পেনশন তোলার জন্য মহিলার আঙুলের ছাপ ব্যবহার করত সে। এদিকে, মহিলার পরিবারের কেউ বা বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, লোকটি তাদের তিনি ঘুমোচ্ছেন। কখনও বলত স্নান করছেন। নানা অছিলায় এড়িয়ে যেত। এক সময় সে বলেছিল, কারও সঙ্গে আর কথা বলতে চান না তার স্ত্রী। তাঁর সঙ্গে সব যোগাযোগ হারিয়ে ফেলার পর, মহিলার পরিবারবর্গের সন্দেহ হয়। ঘটনাটি তাঁরা পুলিশে জানিয়েছিলেন। গত মার্চ মাসে এক নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ওই ফ্রিজারের মধ্যে মহিলার দেহ খুঁজে পেয়েছিল পুলিশ।

আদালতে লোকটির আইনজীবী দাবি করেছিলেন, কোনও কবরস্থানে তাদের সমাধিস্থ করা হোক, এটা নাকি ওই দম্পতির কেউ চাইতেন না। তাঁদের ইচ্ছা ছিল নিজেদের খামারবাড়ির চত্বরেই তাঁদের সমাধি দেওয়া হবে। তাই লোকটি মহিলার মৃত্যুর পর তাকে ফ্রিজারে রেখে দিয়েছিল। পরে তাঁকে বাইরে এক জায়গায় কবর দেবে বলে ভেবেযছিল, কিন্তু তা আর করে উঠতে পারেনি। তবে পুলিশ জানায়, জেরার মুখে লোকটি নিজেই স্ত্রীর মৃত্যুর পর, তাঁর দেহ লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেছিল। একই ফ্রিজারে খাবার এবং স্ত্রীর দেহ রেখে, লাগাতার সে তার স্ত্রীয়ের পেনশন এবং ট্যাক্স ছাড়ের দাবি করে দিয়েছে। মুদ্রার অঙ্কে সব মিলিয়ে যার পরিমাণ ১ কোটি ২০ লক্ষ নরওয়েজিয়ান ক্রোনার বা ৯৬ লক্ষ টাকারও বেশি।

ফ্রিজারটি অন্যান্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কারণে, ‘মৃত ব্যক্তির কবরের পবিত্রতা লঙ্ঘন’ করার দায়েও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে। সব মিলিয়ে নাগরিক স্বাধীনতার লঙ্ঘন, বিরাট জালিয়াতি, মৃত ব্যক্তির কবরের পবিত্রতা লঙ্ঘন, মৃতদেহ বিকৃত করা এবং নথিপত্র জাল করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সে।