সালটা ১৯৪০, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত উপন্যাস 'আদর্শ হিন্দু হোটেল'! যেখানে একদিন নিজের হোটেল খোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন ছোট হোটেলের রাঁধুনি হাজারি ঠাকুর। ধীরে ধীরে হেঁটেছিলেন সেই স্বপ্নপূরণের পথে। সমগ্র রাণাঘাট চত্ত্বরে ছড়িয়ে পড়েছিল হাজারি ঠাকুরের সেই হোটেল ও রান্নার সুনাম। এবার সেই গল্পই পর্দায় বলবেন পরিচালক অরিন্দম শীল। আর এই গল্পেই একসঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন বাংলাদেশের মোশাররফ করিম এবং জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়।
তবে সিনেমা নয়, পরিচালক অরিন্দম শীলের এই আদর্শ হিন্দু হোটেলের গল্প উঠে আসবে OTT-র পর্দায়। এবিষয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে অরিন্দম শীল বলেন, ‘ক্যমেলিয়া প্রোডাকশন এই বছরই একটা OTT প্ল্যাটফর্ম (ফ্রাইডে) আনছে। সেটার জন্যই ক্যামেলিয়া কিছু প্রোজেক্ট আনছে। অন্য প্রযোজকদের এগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটার মধ্যে আদর্শ হিন্দু হোটেল প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছেন অনিলাভ চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায়। ওঁরা আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমাকে এই সিরিজটির পরিচালনার জন্য অনুরোধ করা হয়। মোশাররফ করিম এখানে অভিনয় করছেন। উনি এটাতে কাজ করতে ভীষণই আগ্রহী এবং উনি আমার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছেন। আমারও ওঁর সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘদিনের ইচ্ছে। সিরিজে হাজারি ঠাকুরের চরিত্রে ওঁকেই দেখা যাবে।’
অরিন্দম শীল আরও জানান, ‘গল্পে রাণাঘাটের স্টেশনের পিছনের সেই হোটেল তুলে ধরতে সেট বানানো হচ্ছে। কারণ, তখনকার সেই রাণাঘাট, আর এখনকার রাণাঘাট তো আর এক নেই। তাই প্ল্যাটফর্ম, স্টেশন চত্ত্বর সবই তৈরি করা হবে। যেহেতু এটা একটা পিরিয়ড ড্রামা। এখানে কিছু VFX-এর কাজও রয়েছে। একটা দারুণ কাজ হতে চলেছে। এখানে পদ্ধঝির চরিত্রে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করছেন। অন্যন্য়া অসাধারণ অভিনেত্রী, তবে ওঁকে ঠিকমতো ব্যবহার করা হয়নি। অন্যন্যাও জানিয়েছেন উনি খুব খুশি এই চরিত্রটি পেয়ে। এছাড়াও শুভ্রজিৎ দত্ত, অসীম রায়চৌধুরী, লোকনাথ দে, উষসী রায়, রেশমী সেন, সামিউল আলম, অমিত সাহা, এরাঁ রয়েছেন।’
পরিচালক জানান, এই সিরিজের মিউজিক করবেন বিক্রম ঘোষ, চিত্রনাট্য লিখছেন শুভেন্দু দাসমুন্সি চিত্রনাট্য লিখেছেন। ৬টি এপিসোডের সিরিজ, মোটামুটি সবই তৈরি। তবে সব অভিনেতাদের সময় দেখে ডিসেম্বর, জানুয়ারি নাগাদ শ্যুটিং শুরু হবে। এটার জন্য আমরা গ্রামেগঞ্জে শ্যুট করব। গল্পে একটা নদীর কথা আছে, সেসব মাথায় রেখেই শ্যুটিং হবে।'
অরিন্দম শীলের কথায়, ‘আমার এই গল্পের যে বিষয়টা ভীষণ ইন্টারেস্টিং লাগে, সেটা হল আজকের দিনে এই শব্দগুলি আমরা ভীষণ শুনি। অথচ সেই সময় হাজারি ঠাকুর, যিনি পড়াশোনা জানতেন না, তিনিও নিজের হোটেল ব্যবসার স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বপ্ন পূরণের পথে হেঁটেছিলেন। সেই গল্পই উঠে আসবে এই সিরিজে।’