২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৪:৩৩:১৭ পূর্বাহ্ন


কপিরাইট লঙ্ঘনে ৫ বছরের জেল : সংসদে দুই বিল পাস
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৯-২০২৩
কপিরাইট লঙ্ঘনে ৫ বছরের জেল : সংসদে দুই বিল পাস সংগৃহিত ছবি


কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করলে ৫ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘কপিরাইট বিল, ২০২৩’ পাস হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কপিরাইটের গুরুত্ব উপলব্ধি করে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে যথাসম্ভব সঙ্গতি রেখে এবং কারো কর্ম চুরি বা নকল ঠেকাতে এ আইনটি প্রণয়ন করা জরুরি।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে কপিরাইট বিলটি উত্থাপন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। আরো যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাবসহ বিলটিতে বেশ কিছু সংশোধনী দেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। তবে বিলের ওপর আনা বাছাই কমিটিতে প্রেরণ, জনমত যাচাই ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো সংসদে নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, ২০০০ সালের কপিরাইট আইন বাতিল করে নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে। কপিরাইটের মেয়াদ হবে ৬০ বছর। বিলে প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, ডিজিটাল কাজ, নাটক, লোককাহিনী, শিল্পকলা এবং অডিও রেকর্ডিংয়ের মৌলিক কাজের অধিকার সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে যে মেধাসম্পদ তৈরি হয়, তার আইনগত স্বীকৃতি ও সুরক্ষার জন্য কপিরাইট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গত দুই দশকে প্রযুক্তির অসামান্য উন্নতির প্রেক্ষাপটে মেধাস্বত্বের ব্যবহার ও প্রযুক্তিনির্ভরতা বহুগুণ বেড়েছে এবং পাইরেসি বেড়ে যাবার কারণে মেধাসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষায় বিদ্যমান কপিরাইটের অধিকতর সংশোধন করা প্রয়োজন হওয়ায় বিলটি আনা হয়েছে। বিলটিতে নতুন কিছু সংজ্ঞা সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। মারাকেশ ট্রিটির সঙ্গে সংগতি রেখে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ধারা সংযোজন করা হয়েছে, পাইরেসি প্রতিরোধে নতুন ধারা আনা হয়েছে। মেধাস্বত্ব আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে টাক্সফোর্সের বিধান রাখা হয়েছে, ডিজিটাল কর্ম ও কম্পিউটার ভিত্তিক কাজ কর্ম হালনাগাদ করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, পুস্তক-সিনেমায় কপিরাইট অধিকার ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করলে বা নকল করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
কপিরাইট আইনের ওপর দেয়া বক্তব্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতি শক্তিশালী। কিন্তু উদারতন্ত্রের অর্থনীতি এখানে দেখছি না। ১৫ বছর এ সরকার ক্ষমতায় আছে কিন্তু সাংস্কৃতিক বিপ্লব দেখলাম না। ঢাকা শহরের একটা অংশ কালচারাল হেরিটেজ হওয়ার কথা ছিল, কালচারাল ক্যাপিটাল হওয়ার কথা ছিল- তা হয়নি। উপজেলা পর্যায়ে সংস্কৃতির জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। কালচারাল বিপ্লবের জন্য বরাদ্দ নেই। এর দায়ভার একসময় বাংলাদেশকে, এ সরকারকে নিতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে গণহারে পাইরেসি হচ্ছে অভিযোগ করে শামীম হায়দার বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি ফটোকপির দোকানে দেখা যায় কারো না কারো বই অনুমতি ছাড়া কপি হচ্ছে। এর সুবিধা আছে- ছাত্ররা কম টাকায় বই পায়। তবে আন্তর্জাতিক দায় রয়ে গেছে। একটা সময় বাংলাদেশকে এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হবে, যে এই পাইরেসির বিষয়ে সরকার কী করেছে।
বাংলাদেশ বিমান অর্ডার বিল পাশ : সংসদে বাংলাদেশ বিমান (রহিত বাংলাদেশ বিমান অর্ডার, ১৯৭২ পুনর্বহাল এবং সংশোধন) বিল, ২০২৩ পাস করা হয়েছে। এই বিলটি পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৭ দ্বারা রহিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত বাংলাদেশ বিমান অর্ডার, ১৯৭২ পুনর্বহাল করা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী গতকাল জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন এবং ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
এ সময় বিমানের নানাবিধ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তারা বিলটি জনমত যাচাই, পুনরায় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবসহ সংশোধনী দেন। তবে সেগুলো কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি পাশের পস্তাব করলে তা সংসদে পাস হয়।