২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৪:৩৮:০৮ পূর্বাহ্ন


‘দলিল যার, জমি তার’ বিল সংসদে পাশ
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৯-২০২৩
‘দলিল যার, জমি তার’ বিল সংসদে পাশ সংগৃহিত ছবি


দখলে থাকলেই মালিক নয়, থাকতে হবে দলিলসহ জমির প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ। এ ক্ষেত্রে বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। পাশাপাশি জমির মিথ্যা দলিল করলে হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। এমন বিধান রেখে মঙ্গলবার ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল-২০২৩ পাশ হয়েছে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাশের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনো অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। 

সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করা, প্রতারণামূলকভাবে কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে। ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনো ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ কারও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণসংবলিত কোনো দলিলে স্বাক্ষর করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

এতে বলা হয়েছে, হালনাগাদকৃত সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তার উত্তরাধিকারসূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনো মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির নামে স্টেট একুইজিশন অ্যানড্ টিন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বা হালনাগাদ বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে এবং খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ওই জমি বিক্রি, দান বা হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন না। বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরিস্তর কাটলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। 

এছাড়া সংসদে ১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্স রহিত করে ভূমি সংস্কার বিল পাশ হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ৬০ প্রমিত বিঘার বেশি কৃষিভূমির মালিক বা তার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষিভূমি অর্জন করতে পারবে না। তবে আটটি ক্ষেত্রে এটি শিথিল থাকবে।

সনাতন পদ্ধতির ভূমি জরিপ বাতিল হবে : সনাতন পদ্ধতির চলমান ভূমি জরিপ বাতিল হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশে ডিজিটাল জরিপ ছাড়া যেসব জরিপ হচ্ছে (পুরোনো পদ্ধতিতে) সব জরিপ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আজকে নির্দেশনা দিয়েছি। ইতোমধ্যে যে জরিপ হয়েছে এগুলো বাতিল হিসাবে গণ্য হবে। 

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল-২০২৩-এর ওপর সংশোধনী আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমিমন্ত্রী এ কথা বলেন। ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য অশান্তি কমানো, অপরাধ প্রতিরোধ করা। এ কারণে স্লোগান হচ্ছে দলিল যার, জমিন তার। শক্তি যার জমি তার এটা রোধ করার জন্য এ আইন। তাই এটা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।