২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৭:৫৫:২৫ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপ আজ
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২৩
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপ আজ ছবি-সংগৃহীত


নবম নিরাপত্তা সংলাপে বসছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সংলাপে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিক। নিরাপত্তা সংলাপে ওয়াশিংটনের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। আর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বেসামরিক নিরাপত্তা ও মানবাধিকার, প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ দমন ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সহায়তার বিষয়টি সংলাপে স্থান পাবে। একই সঙ্গে অবাধ, উন্মুক্ত ও নিরাপদ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিয়ে দুই দেশের বেসামরিক পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হবে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় পৌঁছে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিরা একাধিক বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে বিএনপির এক নেত্রীও রয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ড প্রাপ্ত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ফেরতের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করতে পারে বাংলাদেশ। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা ইস্যুটি হুমকি হিসেবে আলোচনায় আসতে পারে। গত বছরের এপ্রিলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপে দুই পক্ষ জিসোমিয়া ও আকসার মতো প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ করেছিল।

কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। এজন্য দেশটি মনে করে সামরিক তথ্য বিনিময় চুক্তি জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট) এবং সামরিক সরঞ্জাম কেনাকাটা চুক্তি আকসার (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট) মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গড়া, প্রতিরক্ষা বাণিজ্য, তথ্য আদান-প্রদান এবং বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সামরিক পর্যায়ে সহযোগিতার সুযোগ প্রসার করা প্রয়োজন। ফলোআপ হিসেবে আজকের সংলাপে বিষয়গুলো আলোচনায় আসতে পারে।

নিরাপত্তা সংলাপ বিষয়ে রবিবার ওয়াশিংটনের মিডিয়া নোটে বলা হয়- যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল আঞ্চলিক উন্নয়ন, মানবাধিকার, নিরাপত্তা সহায়তা এবং সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে আলোচনা করবে। নিরাপত্তা সংলাপ একটি বার্ষিক বেসামরিক আয়োজন, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা সম্পর্কের সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা ইন্দো-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সমস্যা, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার, সামরিক সহযোগিতা, শান্তিরক্ষা, নিরাপত্তা সহায়তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আলোচনা করবে। এ সংলাপ আমাদের দুই সরকারের মধ্যকার সর্বাঙ্গীণ নিরাপত্তা সম্পর্কের অংশ।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক অংশীদারত্ব অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমাদের দুটি দেশের স্বার্থ অভিন্ন। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে মুক্ত, অবারিত, শান্তিপূর্ণ এবং সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে দেশ দুটির দৃষ্টিভঙ্গি একই ধরনের। এ পারস্পরিক লক্ষ্যগুলো অর্জনে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের সংলাপ আয়োজন করা হয়।

ঢাকায় গত ২৩ এবং ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপের খুব কাছাকাছি সময়ে নিরাপত্তা সংলাপটি (৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জানিয়ে ওয়াশিংটনের তরফে বলা হয়, সদ্যসমাপ্ত প্রতিরক্ষা সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশি সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বেসামরিক ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সামরিক সম্পর্কের জন্য সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, যেমন- সামরিক শিক্ষা, শান্তিরক্ষা এবং আগামী বছরের দুর্যোগে সাড়া প্রদান বিষয়ক অনুশীলন এবং বিনিময়সহ আসন্ন সামরিক মহড়া নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রসঙ্গত, মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিরা রেজনিক আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং অস্ত্র স্থানান্তর ব্যুরো অফিসের তত্ত্বাবধান করেন। এ ব্যুরো বিদেশে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রয়, তৃতীয় পক্ষের স্থানান্তর এবং অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা আইনের মাধ্যমে সরকার থেকে সরকারি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম স্থানান্তরে বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। তিনি নিরাপত্তা সহায়তা ব্যুরো অফিসেরও দায়িত্বপ্রাপ্ত।