জরায়ুতে বিরল অস্ত্রোপচার করে পাঁচ কেজি ওজনের টিউমার বের করলেন দুর্গাপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘিরে সাড়া পড়ে গেছে গোটা দুর্গাপুরে।হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার নীলাদ্রি সেনের তত্ত্বাবধানে সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে দেড় ঘণ্টার অপারেশনের পর এই সাফল্য এসেছে।
ডাক্তার নীলাদ্রি সেন জানিয়েছেন, গত প্রায় চার বছর ধরে ওই মহিলা একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। পিরিয়েড বা ঋতুস্রাব চলার সময় ব্যাপক রক্তক্ষরণ হত। তাছাড়া গ্যাস, অম্বলের সমস্যা ছিল। এতে খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতে পারতেন না ওই মহিলা।
নীলাদ্রিবাবু জানান, মহিলাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হলে দেখা যায়, তাঁর পেটের আকার স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বড়। দেখে মনে হচ্ছিল ওই মহিলা বেশ কয়েকমাসের গর্ভবর্তী। এরপরেই সমস্যা বুঝতে মহিলার তলপেটের আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়েছিল। সেখানেই টিউমারের থাকার বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে। কিন্তু ওই মহিলার পেটে ঠিক কত বড় টিউমার রয়েছে তা অবশ্য আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ধরা পড়েনি।
গত মঙ্গলবার ওই মহিলা ভর্তি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। অপারেশনের তৈরি করা হয় চিকিৎসকদের একটি টিম। এরপরেই রিজিওনাল অ্যানাস্থেশিয়া (শরীরের একাংশ অসাড় করে) দিয়ে রোগী অজ্ঞান করে এই বিরল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই মহিলা সিমেন্ট কলোনির বাসিন্দা। তাঁর স্বামী রঞ্জিত দাস জানিয়েছেন, সেলসের কাজ করেন। রঞ্জিতবাবু জানান, বহুদিন ধরেই তাঁর স্ত্রী কষ্ট পাচ্ছিলেন। এর আগে চার-পাঁচ ডাক্তারের কাছে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এমনকী হোমিওপ্যাথি ডাক্তারও দেখিয়েছিলেন। পরে স্ত্রীকে নিয়ে দুর্গাপুর হাসপাতালে ডাক্তার নীলাদ্রি সেনের কাছে নিয়ে এসেছিলেন। ওই চিকিৎসক পরীক্ষা করার পর বোঝা যায় স্ত্রীর জরায়ুতে মস্ত একটি টিউমার রয়েছে।
রঞ্জিতবাবু জানান, পিরিয়েড বা ঋতুস্রাবের সময় স্ত্রী মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ব্যাপক রক্তক্ষরণের পাশাপাশি গায়ে হাতে প্রচন্ড ব্যথায় হত। গ্যাস, অম্বলের জন্য কিছু খেতেও পারতেন না স্ত্রী।