সুরা হুমাযাহ কোরআনের ১০৪তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ৯টি। এ সুরায় লোভ, পরনিন্দা, সাক্ষাতে মানুষকে মন্দ বলা, কষ্ট দেওয়া, অপদস্থ করা ইত্যাদি গুনাহের শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে।
সুরা হুমাযাহ
(১) দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে সাক্ষাতে বা অসাক্ষাতে মানুষের নিন্দা করে। (২) যে অর্থ জমায় ও তা গুণে গুণে রাখে।(৩) সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবী করবে। (৪) কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। (৫) হুতামা কী, তা কি তুমি জান? (৬) আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন। (৭) যা হৃৎপিন্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। (৮) নিশ্চয় তা তাদেরকে আবদ্ধ করে রাখবে (৯) উঁচু উঁচু স্তম্ভে।
৫টি শিক্ষা ও নির্দেশনা:
১. এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের পর মানুষ আবার জীবন লাভ করবে এবং নিজেদের কৃত ভালো কাজের প্রতিদান ও মন্দ কাজের শাস্তি পাবে -এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা জরুরি।
২. গিবত বা পরনিন্দা অর্থাৎ অনুপস্থিতিতে কারো নিন্দা করা বা দোষত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা গর্হিত পাপ। এ পাপের জন্য পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কুরআনের আরেকটি আয়াতে গিবতকে ভাইয়ের মাংস খাওয়ার সাথে তুলনা করে আল্লাহ বলেছেন,
لَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ
একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করো। (সুরা হুজুরাত: ১২)
৩. সামনা সামনি মানুষকে মন্দ বলা, ঠাট্ট-মশকরা করা, অপমান করাও গুনাহ এবং এ থেকে বিরত থাকতে হবে। কথা ও আচরণে মানুষকে কষ্ট দেওয়া যাবে না।
৪. সম্পদের লোভ ও কৃপণতা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। দুনিয়ার জীবনের মতো দুনিয়ার অর্থবিত্তের চাকচিক্যও ক্ষণস্থায়ী। অর্থবিত্ত কাউকে চিরজীবী করতে পারে না, কারো চিরস্থায়ী অবলম্বন হয় না।
৫. পৃথিবীতে ঈমান ও নেক আমলের মাধ্যমে পরকালের শাস্তি থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। অবিশ্বাসী ও মন্দ আমলকারীদের জন্য পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আগুন যা মানুষের হৃৎপিন্ড পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।