চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারায় ৭৮৪ একর জমির ওপর চীন সরকারের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে ‘চাইনিজ ইকোনমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন’ করা হবে। সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির জন্য ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রাথমিক-মাধ্যমিকের জন্য ২৭৮ কোটি টাকার পাঠ্যপুস্তক কিনবে সরকার। বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য একটি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য সাতটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তিনটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একটি এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবনা ছিল।
ক্রয় কমিটির অনুমোদিত সাতটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৮৩৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৮ টাকা। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিন উল আহসান। তিনি বলেন, চীন সরকারের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে ‘চাইনিজ ইকোনমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন’ প্রতিষ্ঠার জন্য বহিস্থ অবকাঠামো নির্মাণ এবং উপযোগ সেবার সংস্থান সম্পর্কিত কাজ চীন সরকার মনোনীত ডেভেলপার চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের (সিআরবিসি) কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকালে দেশটির সরকার চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনে আগ্রহ ব্যক্ত করে। ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর দুই বছর পর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঢাকা সফরে এলে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ সময় ঠিক হয় অর্থনৈতিক অঞ্চলটির অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও বেজার সঙ্গে চায়না হারবারের কোনো চূড়ান্ত চুক্তি না হওয়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চলটির কোনো কাজ হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ছয় বছর পর ২০২২ সালের ১১ আগস্ট চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপনে চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে বেজা। এই চুক্তির আগেই চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন স্থাপনে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় ৭৮৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের জনগণের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ১২৭ কোটি ৯৬ টাকা ব্যয়ে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়া ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জন্য ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৮ হাজার ২৪৬টি পাঠ্যপুস্তক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৩ কোটি ৫৩ লাখ, ৮১ হাজার ২৩৯টি পাঠ্যপুস্তক এবং মাধ্যমিকের জন্য ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭টি পাঠ্যপুস্তক রয়েছে। ২৭৮ কোটি ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৩২৪ টাকা ব্যয়ে এ পাঠ্যপুস্তক কিনতে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।