১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ১২:০০:৩৪ অপরাহ্ন


আল্লাহকে স্মরণ করার ফজিলত ও মর্যাদা
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৮-২০২৩
আল্লাহকে স্মরণ করার ফজিলত ও মর্যাদা ফাইল ফটো


আল্লাহ তাআলা বলেন, ‌‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদের স্মরণ করব।' বান্দা কেন আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করবে? তাঁকে স্মরণ করার উপকারিতাই বা কী? এ সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী বলেছেন?

আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করলে তিনি বান্দার গুনাহ মাফ করে দেবেন। ফলে বান্দা তাঁর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হবে। হাদিসে আল্লাহকে স্মরণ করার বা আল্লাহর জিকির করার অনেক উপকারিতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِیۡ وَ لَا تَکۡفُرُوۡنِ

‘অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ করো; আমিও তোমাদের স্মরণ করবো। তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও, আর অকৃতজ্ঞ হয়ো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫২)

এ আয়াতটি বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়াত। এ আয়াতে বান্দাকে কৃতজ্ঞতা ও স্মরণ করার প্রতি জোর দিয়েছেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এ আয়াতের উপকারিতা ওঠে এসেছে এভাবে-

১. হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলোচ্য আয়াত সম্পর্কে বলেছন, ‌আল্লাহ তাআলা বলেন- হে বান্দাগণ! তোমরা আমাকে আমার ইবাদাতের মাধ্যমে স্মরণ কর। অর্থাৎ আমার ইবাদাত করতে থাক, আমি মাগফেরাত দানের মাধ্যমে তোমাদেরকে স্মরণ করব তথা তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেব।

২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বান্দা আমাকে যেমন মনে করে আমি তার জন্য তেমনই হয়ে থাকি। আর সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার হয়ে যাই।’

৩. হজরত আবদুল্লাহ শাকিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তির অন্তরে দুটি কক্ষ আছে। একটিতে ফেরেশতা থাকে এবং অপরটিতে শয়তান। যখন মানুষ আল্লাহর জিকিরে মশগুল হয় তখন শয়তান দূরে সরে যায় এবং যখন জিকির থেকে গাফেল হয়ে পড়ে, তখন শয়তান নিজের ঠোঁট তার অন্তরে স্থাপন করে এবং কু-মন্ত্রণা দিতে থাকে।

আল্লাহর জিকিরই গাফলতকে দূর করে দেয় এবং গাফলতের কারণেই মূলত অন্তর কঠোর হয়ে যায়। গাফলত থেকে বিজয়ী হওয়ার উপায় স্বরূপ হাদিসের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ মুসলিম থেকে ছোট্ট আরও একটি হাদিস তুলে ধরছি-

৪. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মোফরাদ’ ব্যক্তিগণ বিজয়ী হয়ে গেছে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! মোফরাদ ব্যক্তি কারা? তিনি বললেন, ‘অধিক পরিমাণে জিকিরকারী নারী ও পুরুষ।

আল্লাহ তাআলার ঘোষণা, ‘যদি তোমরা আমাকে স্মরণ কর; তবে আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব।’ এ আয়াতের ঘোষণা মোতাবেক মুসলিম উম্মাহর উচিত, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকা। আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালনা করা। তবেই আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হিসেবে সাফল্য লাভ করা সম্ভব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রতিটি কর্মে তার কর্মনীতি অনুসরণ তথা তাকে স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।