২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৯:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন


যে তিন গুণের অধিকারী ‘সৎকর্মশীল’
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৮-২০২৩
যে তিন গুণের অধিকারী ‘সৎকর্মশীল’ ফাইল ফটো


তিনটি গুণের অধিকারী ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ সৎকর্মশীল বলেছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি তাদের ভালোবাসেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। কোরআনে উল্লেখিত গুণ তিনটি কী? আর তারাই বা কারা?

ঈমানদার মুমিন মুসলমানের অন্যতম গুণ হলো নেক আমল করা বা সৎকর্ম করা। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে সৎকর্মশীল তথা নেক আমলকারীদের ভালোবাসেন বলে ৩টি গুণের কথাও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে তার প্রিয় বান্দাদের বিশেষ গুণগুলোর কথা এভাবে তুলে ধরেছেন-

الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ فِی السَّرَّآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ الۡکٰظِمِیۡنَ الۡغَیۡظَ وَ الۡعَافِیۡنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

‘যারা স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল অবস্থায় দান করে, ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে আর আল্লাহ (বিশুদ্ধচিত্তের অধিকারী) সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ১৩৪)

মহান আল্লাহ কোরআনুল কারিমের তিনটি বিশেষ গুণের অধিকারী মানুষকে ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বিশেষ গুণগুলো হলো-

১. স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল অবস্থায় দান করা।

২. ক্রোধ বা রাগ সংবরণ করা

৩. মানুষকে ক্ষমা করা।

কোরআনের এ গুণ সমৃদ্ধ আয়াত পাঠ করেই এক দাসী মুক্তি পান। যে নারীকে আজাদ বা স্বাধীন করে দেন হজরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর ছেলে হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহু।

ইসলামের ঐতিহাসিক বিস্ময়কর ঘটনাবলী সমৃদ্ধ আব্দুল মালেক মুজাহিদির গ্রন্থ ‘সোনালী পাতা’য় উঠে এসেছে সে ঘটনা। যা তুলে ধরা হলো-

ইসলামে চতুর্থ খলিফা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর নাতি হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহ তাআলা একদিন ওজু করতে গেলেন। তার সেবিকা গরম পানি নিয়ে উপস্থিত। হঠাৎ করেই সেবিকার হাত থেকে গরম পানির পাত্রটি হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহুর পায়ের ওপর পড়ে। তখন গরম পানি পড়ে তার পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহ সেবিকার দিকে তাতেই সে নারী কোরআনে বর্ণিত মুত্তাকি ব্যক্তির একটি গুণের কথা উল্লেখ করেন-

وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ

‘মুত্তাকি ব্যক্তি ক্রোধ বা রাগ সংবরণ করে’।

তখন হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহ বললেন-

قَدْ كَظَمْتُ غَيْظِىْ

‘অবশ্যই আমি আমার ক্রোধ সংবরণ করাম।’

সেবিকা বলল আল্লাহ আরও বলেন-

وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ

‘(মুত্তাকিরা) মানুষকে ক্ষমাকারী।’

তিনি বললেন-

عَفَا اللهُ عَنْكِ

‘আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন।’

সেবিকা তার (হজরত আলি রাহিমাহুল্লাহ-এর) মুখে নিজের ভুলের ক্ষমা লাভের কথা শুনেই মুত্তাকির প্রশংসামূলক বিশেষ গুণটির কথাও উল্লেখ করেন-

وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

 ‘আর আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন।’

সেবিকার মুখে মুত্তাকির প্রশংসা ও গুণের কথা শুনে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। আর তখননি তিনি বলেন ওঠেন-

‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাকে আজাদ বা স্বাধীন করে দিলাম।’

আল্লাহ ঈমানদার মুত্তাকি বান্দাদেরকে এ গুণগুলো অর্জন করার মাধ্যমে তার ক্ষমা ও বিশাল জান্নাত পাওয়ার প্রতিযোগিতা করার কথাই বলেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সৎকর্মশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন। কোরআনে বর্ণিত মুত্তাকির গুণগুলো নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।