একটানা ২০ বছর তিনি সৌদি আরবে ছিলেন কৃষক আব্দুল মজিদ। তিনি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল ইউনিয়নের বিলকৃষ্ণপুর ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। কৃষক আব্দুল মজিদ ৩০ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন সৌদি আরবের খেজুরের বাগান। সেখানে থাকতেই ইউটিউবে বাংলাদেশে খেজুর চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। প্রায় তিন বছর আগে ২০২০ সালে দেশে আসার সময় সৌদি থেকে মরিউম ও আজওয়া দুই জাতের খেজুরবীজ নিয়ে আসেন তিনি। সেই বীজ দিয়ে শুরু করেন নার্সারি। গড়ে তোলেন খেজুর বাগান। অল্প দিনেই সৌদি খেজুরের বাগান করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মজিদ।
বর্তমানে বাগানের কিছু গাছে মোচা ও খেজুর ধরেছে। কিছুদিন পরই খাওয়ার উপযোগী হবে খেজুর। মরুর এই সুমিষ্ট খেজুর নিজের আঙিনাতে ফলাতে পেরে খুশির শেষ নেই এই কৃষকের।
যে খেজুর সৌদিতে চাষ হয়, সেই খেজুর এই প্রথম চাষ হচ্ছে রাণীনগরে। এই দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন অনেকে ছুটে আসছেন মজিদের গড়ে তোলা বাগানে। তার বাগান দেখে এখন অনেকেই বাগান তৈরী করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বাগান করার জন্য অনেকেই তার চারা নেওয়ার জন্যে যোগাযোগ করছেন। স্থানীয়দের অনেকেই বলেন, আমরা দেশের মাটিতে কখনও বিদেশি খেজুর চাষ দেখিনি। এবারই প্রথম দেখলাম। তিনি যদি খেজুর চাষে সফল হন, তাহলে আমরাও বাগান করে খেজুর চাষ করব।
আব্দুল মজিদ বলেন, ‘মানুষের ইচ্ছা ও পরিশ্রম তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। সে উদ্যম নিয়েই নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। ৩০ শতাংশ জমির বাগানে সৌদির মরিউম ও আজওয়া দুই জাতের খেজুর চাষ করেছি। কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করলে ব্যাপক পরিসরে খেজুর চাষ ছড়িয়ে দেয়া যাবে। এখন আর বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। এ দেশের মাটিতে বিদেশি ফল ফলিয়ে আয় করা সম্ভব। এছাড়াও খেজুরের বাগান থেকে নিজ পরিবার ও আত্মীয়দের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যাপক লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়াও রাণীনগর উপজেলাসহ সারা দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই খেজুরের চাষ হলে একদিকে আর্থিক লাভবান হওয়া যাবে অপরদিকে দেশের বেকারত্ব দূর হবে বলেও দাবি করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় এই প্রথম একজন কৃষক সৌদির সুমিষ্ট খেজুর চাষ করছেন। তার কিছু গাছে মোচা ও খেজুরও ধরেছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব। এই খেজুর চাষ সম্প্রসারণের জন্য কাজ করব বলেও জানান এই কৃষিকর্মকর্তা।