টালিগঞ্জ পাড়া থেকে আরব সাগরের পারে, সাহসী সুন্দরীদের মধ্যে প্রথম সারির আসনে বসেন কলকাতা ডিভা, মুনমুন সেন। মুনমুন ঝড় তুলেছেন বারবার, মিথ ভেঙেছেন প্রতিবার। শুধু খোলামেলা ফটোশ্যুটেই কী মুনমুনের মিথ ভাঙার নজির? না, তা একেবারেই না। মুনমুনকে জানতে গেলে, তাঁকে বুঝতে হয়, তাঁর মন পড়তে হয়।
মুনমুন সেই নারী, যিনি বিয়ে হওয়ার পরে, দুই কন্যাসন্তানের মা হওয়ার পরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মা সুচিত্রা সেনের মতোই মুনমুনের ফিল্মে আসা বিয়ে, সন্তানের পরেই। কিন্তু মুনমুন দেখালেন, তিনি নিজে মা হওয়ার পরেও মডেলিং দুনিয়ায় ঝড় তোলা যায়। মুনমুন সেন মানেই, আজও যাঁর ছবি দেখলেই থমকে যায় সকল পুরুষের হৃদয়। মুনমুন যেন অধরা মাধুরী, রহস্যে মোড়া দূরের তারা।
এ হেন মুনমুন সেনের মন পড়তে পেরেছিলেন এক তরুণ। তখন তিনি সদ্য ফটোগ্রাফি জগতে পা রেখেছেন। আজকের কলকাতা-মুম্বই কাঁপানো বিখ্যাত ফটোগ্রাফার, সাত্যকি ঘোষ। ঘোষ পদবী তাঁর নামের ঐতিহ্য, পরম্পরা, গর্ব। কারণ সাত্যকি ঘোষ হলেন লেজেন্ড চিত্রগ্রাহক নিমাই ঘোষের ছেলে। নিমাই ঘোষ সত্যজিৎ রায়ের জীবনের স্থির চিত্রগ্রাহক।
সাত্যকির ক্যামেরায় যিনি প্রথম নারী হলেন, তিনি মুনমুন সেন। সাত্যকি বলেন “মুনমুন সেন আমার দিদি, আমার মুনমুনদি, আর আমি মুনমুনদির ভাই দিলু।” সাত্যকি তাঁর ডাক নামেই মুনমুনের কাছে আদরণীয়।
খোলামেলা ফটোশ্যুট শুধু নয়, মুনমুন সেনের রুচি, শিক্ষা, আভিজাত্য, গ্ল্যামার, সর্বোপরি মুনমুন যে একজন ভাল মা, সেটা বারবার উঠে এসছে সাত্যকি ঘোষের ছবিতে। সেই আটের দশক থেকে মুনমুন-সাত্যকি বন্ডিং শুরু।
দিন দুয়েক আগেই সাত্যকি ঘোষ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন তাঁর তোলা মুনমুন সেনের এক্সক্লুসিভ ছবি। সে ছবি দেখে ফের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুনমুনের মায়াবী তাকানো থেকে একটুকরো হাসির রংধনু ছবিকে করে তুলেছে মনোহর। সাদা-কালো সে ছবিতে মুনমুনের কপালে এসে পড়েছে চিকন চুলের স্পর্শ, উন্নত গ্রীবাতে স্বপ্নঘোর, আর নাকে হিরের জ্বলজ্বলে নাকছাবি। সঙ্গে অবশ্যই শ্রীমতী সেনের চোখের রহস্যময়ী চাউনি।(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সাত্যকির তোলা মুনমুনের ছবি দেখে ছিটকে গেছেন অভিনেতা, অভিনেত্রী থেকে ইন্ডাস্ট্রির নামকরা ফটোগ্রাফাররাও। সাত্যকির ক্যামেরার সামনেই যে মুনমুন স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, তা বোঝা যায় ছবিতে। ফেসবুক থেকে ইনস্টাগ্রামে, ছবিতে আসছে একের পর এক কমেন্ট।
এই শহরের আর এক নামী ফটোগ্রাফার তপন দাস লিখেছেন, “মুনমুন সেনের সবচেয়ে বেশি ভাল ছবি একমাত্র সাত্যকির ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছে। আমি একবার শঙ্কর লাল ভট্টাচার্যের সাথে গিয়েছিলাম মুনমুন সেনের বাড়িতে। মুনমুন সেন আমাকে ছবি তুলতে দেননি। বলেছিলেন সাত্যকি ছাড়া আমি কাউকে ছবি তুলতে দিই না। সেটা যে ঠিক, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। মারভেলাস।”
কেউ লিখেছেন “সত্যিই সুন্দরী মায়ের সুন্দরী মেয়ে। তবে দূর থেকেই দেখা ভালো, কাছে একদমই না প্লিজ।” সাত্যকি যে নিমাই ঘোষের সুযোগ্য পুত্র সেটা মনে করিয়ে দিয়ে এক গুণগ্রাহী লিখলেন “এমন ছবি তোলার ক্ষমতা সকলের নেই, একজন ছিলেন, বর্তমানে একজন আছেন।”
একজন গুণগ্রাহী কমেন্ট করেছেন “আপনার হাতে যাদু আছে সাত্যকি!” এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে নিমাই ঘোষকে উত্তমকুমার তাঁর প্রথম ছবি তোলার সময় বলেছিলেন “আপনার হাতে কেমন যাদু আছেন দেখান তো নিমাই বাবু!” তারপর তো নিমাই ঘোষের লেন্সে উত্তমকুমার ইতিহাস। আজ আবার সাত্যকিকেও একজন একই ধরনের কথা বললেন, সুচিত্রা কন্যার ছবিতে।