দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে হাতির মল দিয়ে তৈরি অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় জিন।
ইন্দলভু নামের এই জিন বাজারজাত করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক দম্পতি। এই পানীয়ের ফ্লেভার তৈর হয় হাতির মলে থাকা লতাপাতা, ফলমূল ও শেকড়-বাকড়ের নির্যাস দিয়ে।
কেনিয়ার এক সাফারি পার্কে ভ্রমণে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পলা ও লেস অ্যানসলে দম্পতি। জিন অ্যান্ড টনিকে চুমুক মদিতে দিতে প্রকৃতিকে উপভোগ করছিলেন তারা। এ সময়ই আচমকাই পলার মাথায় খেলে যায় এক উদ্ভট পরিকল্পনা। এমন পানীয় বানালে কেমন হয় যার ফ্লেভার হবে হাতির মলের মতো।
সাফারি পার্কে ভ্রমণের সময় এই দম্পতি দেখতে পান ঘন ঘন মলত্যাগ করছে হাতির পাল। স্থানীয় এক গেম রেঞ্জার তাদের জানান, খাবারের মাত্র ৩০ শতাংশকেই হজম করতে পারে হাতি। বাকি খাবার অক্ষত অবস্থাতেই মলের সাথে বেরিয়ে আসে।
এখান থেকেই হাতির মল দিয়ে পানীয় বানানোর চিন্তাটা আসে পলার মনে। তবে শুধু ভাবনাতেই থেমে থাকেনি এ পরিকল্পনা। ২০১৮ সাল থেকে বাজারজাত হচ্ছে হাতির মল দিয়ে বানানো তাদের জিন ইন্দলভু। স্থানীয় নুনি ভাষায় যার মানে হচ্ছে হাতি।
হাতির মলের সাথে বের হয়ে আসা অক্ষত লতাপাতা, ফলমূল ও শেকড়বাকড়ের নির্যাস দিয়ে তৈরি হয় পানীয় ইন্দলভু। এ জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘুরে ঘুরে হাতির তাজা মল সংগ্রহ করেন পলা ও তার স্বামী লেস অ্যানসলে।
এসব মলকে প্রথমে ধুয়ে শুকোনো হয়। এখান থেকে সংগ্রহ করা হয় লতাপাতা, ফলমূলকে। যা থেকে তৈরি হয় ইন্দলভুর ফ্লেভার। পরে এই ফ্লেভার যোগ করা হয় অ্যালকোহলে।
এ ব্যাপারে ইন্দলভুর উদ্যোক্তা লেস অ্যানসলে বলেন, হাতি যা খায় তার খুব কমই হজম করতে পারে। ফলে হাতি ঘন ঘন মলত্যাগ করে। এছাড়া তাদের পাকস্থলীতে হজমে সাহায্যকারী ব্যাকটেরিয়া কম থাকার কারণে বেশিরভাগ খাদ্যই হজম হওয়ার আগে মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। ফলে মলের ভেতর থাকা লতাপাতা ফলমূল অনেকটাই অটুট থাকে। আর খাদ্যের ব্যাপারে হাতি খুব খুঁতখুতেঁ।সবচেয়ে সেরা লতাপাতা ও ফলমূলই খুঁজে খুঁজে খায় তারা।
বর্তমানে প্রতি মাসে দেড় হাজার বোতল ইন্দলভু রফতানি হচ্ছে। এই ব্যবসার লাভের ১৫ শতাংশ যায় জাবুলানি সাফারির হার্ড নেচার রিজার্ভে চড়ে বেড়ানো হাতির পালের কল্যাণে।
দক্ষিণের আফ্রিকার সীমা ছাড়িয়ে জিন ইন্দলভু এখন রফতানি হচ্ছে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও তাইওয়ানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার এক বারটেন্ডারের মতে, হাতির মল দিয়ে তৈরি এই জিনের স্বাদ অনেক কমলার রসের মতো। খুবই প্রাণবন্ত ও সজীব। এটাতে রয়েছে প্রকৃতির গন্ধ।
ফলে এই জিন অন্য পানীয়ের থেকে আলাদা। দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এটি।
রাজশাহীর সময় /এএইচ