ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তের উপগ্রহচিত্র সামনে আসার পরেই এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জে সরব হল আমেরিকা। মস্কোর আশ্বাসবাণী খারিজ করে আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের দাবি, ইউক্রেন সীমান্তে পুরোদমে যুদ্ধের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে রুশ ফৌজ। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সভায় তিনি বলেন, ‘‘গোয়েন্দা তথ্যে স্পষ্ট, যে কোনও সময় প্রতিবেশীকে আক্রমণের জন্য সেনাকে নির্দেশ দিতে পারে রাশিয়া সরকার।’’
ইউক্রেনে সেনা অভিযান না চালানোর বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্রতিশ্রুতিও দাবি করেন ব্লিঙ্কেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বৃহস্পতিবার ফের ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশঙ্কা করছি কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রমণ শুরু করবে রুশ সেনা।’’ এরই মধ্যে আমেরিকার মস্কোর দূতাবাসের এক আধিকারিককে রাশিয়া বরখাস্ত করেছে। এর ফলে পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের কূটনৈতিক টানাপড়েন আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মস্কোর তরফে মঙ্গলবার ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা খারিজ করা হয়েছিল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র আইগর কোনাশেনকভ জানান, দক্ষিণ ও পশ্চিম প্রদেশের সেনা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট মহড়া শেষ হওয়ায় তারা ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু এর পরেই বাইডেন বলেছিলেন, ‘‘মুখে বাহিনী প্রত্যাহারের কথা বললেও রাশিয়া যে কোনও সময় ইউক্রেনের উপরে হামলা চালাতে পারে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘রাশিয়া যে সত্যিই সীমান্ত থেকে কিছুটা বাহিনী সরিয়েছে, তার প্রমাণ কিন্তু আমরা পাইনি। উল্টে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, রুশ সেনা ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া এমন জায়গায় রয়েছে, যা এখনও যথেষ্ট ভয়ের।
পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করা হয় ইউক্রেন সীমান্তে নতুন করে অন্তত ৭ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ভ্লাদিমির পুতিন সরকার।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরানো তো দূরের কথা, এখনও ক্রমাগত সেনা পাঠিয়ে যাচ্ছে মস্কো। ইউক্রেন সীমান্তের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ১৪টি ঘাঁটি বানিয়েছে রুশ ফৌজ। দ্রুত সীমান্তে সেনা পাঠাতে রাতারাতি তৈরি করে ফেলা হয়েছে অস্থায়ী সেতু। তা ছাড়া, রুশ সীমান্ত-শহর ভালিউকিতে বেশ কিছু সাঁজোয়া গাড়ি ও সেনা কপ্টার মজুত রাখা হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার এই শহরটি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। বুধবার ক্রাইমিয়ার বন্দরে পৌঁছেছে তিনটি রুশ যুদ্ধজাহাজ। ২০১৪ থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের এই অংশটি নিজেদের দখলে রেখে দিয়েছে।
রাজশাহীর সময় / এফ কে