বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, জনগণ আওয়ামী লীগের সাথে আছেন। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে ভালো, না আসলেও কিছু যায় আসে না। নির্বাচন হবেই। আগামী নির্বাচনে জনগণ আবারো নৌকার পক্ষে রায় দেবে, আওয়ামী লীগকেই বিজয়ী করবে। আমাদের বিজয়ী হতেই হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আমরা যদি ধরে রাখতে না পারি তাহলে আমাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। বিএনপি-জামায়াত সুযোগ পেলে আমাদের সকল অর্জন নষ্ট করে ফেলবে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় নওগাঁ জেলা স্কুল মাঠে নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটি বাস্তবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। গত ১০/ ১৫ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, যমুনা সেতুর রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। আজকে বিশ^ আমাদের সমীহ করছে। শ্রীলংকার আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছেন। এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করে ফেলেছি। আমাদের উন্নয়ন ও গৌরবের অর্জন মানুষের মাঝে প্রচার করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রজন্ম আজকে নৌকার পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার তাদের পছন্দের নতুন বাংলাদেশ গড়ছে। বাংলাদেশর মানুষ জীবনে যা কল্পনা করেনি, সেটি আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আকাশে ঘুরছে। দেশের মানুষের মাথা পিছু আয় বেড়েছে। বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য পূরণের পথে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সকল সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন গ্রামের মানুষেরা।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি সারাদেশে আগুন সন্ত্রাস করেছে। নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। জনগণের জন্য রাজনীতি করলে তারা আগুন সন্ত্রাস করতে পারতো না। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো পাঁয়তারা করছে বিএনপি।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, আইনের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। গত নির্বাচন কমিশন গঠনের সময়ও বিএনপি নানা কথা বলেছিল, এবারো বলছে। বিএনপিসহ কয়েকটি ছোট দল বলছে, তারা নির্বাচনে যাবেন না। অথচ তাদের দলের ডা. জাফরুল্লাহ সার্চ কমিটির কাছে নাম জমা দিয়েছে। আমরা মনে করি, বিএনপির সাথে আলাপ করেই ডা. জাফরুল্লাহ নামগুলো দিয়েছেন। বিএনপির এক অঙ্গে নানা রূপ।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে আওয়ামী লীগে ত্যাগী ও ভালো মানুষকে নেতৃত্বে আনতে হবে। যাকে দেখে মানুষ সালাম দেবে, তাকে নেতৃত্বের জন্য নির্বাচন করতে হবে।
সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান সরকার এমপি, মহাদেবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছলিম উদ্দিন তরফদার এমপি, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল এমপি প্রমুখ।
সম্মেলনের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরআগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উন্মোলন ও বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে মাহবুবুল হক কমল ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজাউল করিমের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
রাজশাহীর সময় / এফ কে