এবার চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে (পিসিটি) বড় আকারের জাহাজ ভেড়াবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পিসিটিতে পণ্য নিয়ে ভিড়বে ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ‘মেঘনা প্রিন্সেস’। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি বন্দরের চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) পরীক্ষামূলকভাবে ভেড়ানো হয় চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কমন অ্যাটলাস’। পরীক্ষামূলকভাবে সেই জাহাজ ভেড়ানো হলেও জাহাজ থেকে পণ্য জেটিতে নামানো হয়নি। উদ্বোধনের পরই জাহাজটি বহির্নোঙরে ফিরে যায়। এর দেড় মাস পর উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পিসিটিতে বড় জাহাজ ভেড়ানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘পিসিটিতে এখনো আনুষ্ঠানিক জাহাজ ভিড়াইনি। সেই জেটিতে ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ ভেড়ানোর জন্য পিসিটির পাশে বন্দর চ্যানেল বা প্রবেশপথ খনন করা হয়েছে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজ উদ্বোধন করবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগে আমরা সিসিটিতে বড় জাহাজ ভিড়িয়েছি; এখন পিসিটিতে ভেড়ানো শুরু করছি। এরপর নিয়মিতভাবেই বড় জাহাজ ভেড়ানো হবে।’
এত দিন পিসিটিতে ছোট জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে, বিশেষ করে সরকারিভাবে আনা চালের জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে। বড় জাহাজ ভেড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা এখনো হয়নি।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান জেটিগুলোতে এখন সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট বা গভীরতা এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারে। বন্দরে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজে এক হাজার ৬০০ একক কনটেইনার; সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজে দুই হাজার ২০০ একক এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজে দুই হাজার ৬০০ একক কনটেইনার পরিবহনের সুযোগ আছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪০০ একক কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারে। নতুন উদ্যোগের ফলে সর্বোচ্চ তিন হাজার একক কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে।
শিপিং কম্পানি জেএসি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিমুল মজুমদার বলেন, ‘বড় আকারের জাহাজ ভেড়ালে একেক টাইপের জাহাজে একেকভাবে উপকৃত হবেন আমদানিকারকরা। ধরুন, এখন বহির্নোঙরে একসঙ্গে ৫৫ হাজার টন চিনি নিয়ে জাহাজ এলে সেটির অর্ধেক নামানোর পর ওজন হালকা হলে বন্দর জেটিতে ভেড়ার উপযোগী হয়। নতুন নিয়মে পুরো ৫৫ হাজার টন জাহাজ একসঙ্গেই জেটিতে ভিড়তে পারবে। এতে সময় সাশ্রয় হবে, পণ্য লাইটারিং খরচ কমবে এবং পণ্য লাইটারিংয়ে অপচয় কমবে। সব মিলিয়ে আমদানিকারকরা উপকৃত হবেন নিশ্চিত। আর এই উদ্যোগের ফলে শিপিং বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হবে।