ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশে আসছেন। তিনি আগামীকাল বুধবার দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে (ফরেন অফিস কনসালটেশন-এফওসি) অংশগ্রহণ করবেন। বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা নিরসন, ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতাধীন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং দুই দেশের মধ্যকার সম্ভাব্য সেপা চুক্তি অগ্রাধিকার পাবে।
এ ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতাও চাইবে বাংলাদেশ। বৈঠকে আলোচনা হতে পারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফর এবং দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের পরবর্তী বৈঠক নিয়ে। আর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় চাইলে কথা হতে পারে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি নিয়েও।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকায় এটিই হবে বিনয় মোহন কোয়াত্রার প্রথম সফর। এর আগে গত বছর এপ্রিলে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি।
সম্ভাব্য সফরসূচি অনুসারে, আজ রাতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিনয় মোহনকে স্বাগত জানাবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। আগামীকাল বুধবার সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক হবে। এর পর দুই সচিবের নেতৃত্বে হবে ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’। দুপুরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন বিনয় মোহন। এর পর তিনি গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বিকালে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে। এর পর যোগ দেবেন ভারতীয় হাইকমিশনারের দেওয়া নৈশভোজে। ঢাকা ছাড়বেন পরের দিন সকালে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শেষ মুহূর্তে সফরের এজেন্ডা ঠিক করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা হবে। আলোচনা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য দিল্লি সফর নিয়েও।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে এটি নিয়মিত বৈঠক। শেষবার আমি দিল্লি গিয়েছিলাম। নতুন পররাষ্ট্র সচিব নিয়োগের পরে তিনি সেভাবে আসেননি। দুই দেশের সব ইস্যু নিয়ে আলোচনা করব।’
আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি সম্পর্কে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এটি সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কোনো অনুরোধ জানালে বিবেচনা করে দেখব।’