২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনারই যেন ফের পুনরাবৃত্তি ঘটল পাকিস্তানে। শনিবার, সে দেশের পঞ্জাব প্রদেশের খানেলওয়াল জেলায় এক জন মাঝবয়সি ব্যক্তিকে গাছে ঝুলিয়ে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলল উত্তেজিত জনতা। ওই ব্যক্তির ‘অপরাধ’, তিনি কোরানের কয়েকটি পাতা ছিঁড়ে ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করেছেন!
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, খানেলওয়াল জেলার জঙ্গল ডেরা গ্রামে শনিবার হঠাৎ করেই রাষ্ট্র হয়ে যায় যে নিহত ব্যক্তি কোরানের কয়েকটি পাতা ছিঁড়ে সেগুলি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। ‘অভিযুক্ত’ ব্যক্তির উপর চড়াও হয় এক দল উত্তেজিত গ্রামবাসী। মারতে মারতে তাঁকে একটি গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে শুরু হয় ইট ও পাথর বৃষ্টি। কিছু ক্ষণ পরে তিনি মারা গেলে গাছেই বেঁধে রাখা হয় দেহটি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি বার বার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করছিলেন। কিন্তু উত্তেজিত জনতা তা কানেই তোলেনি। শুধু তাই নয়, পুলিশের একটি দল ধর্মগ্রন্থ অবমাননার অভিযোগ পেয়ে গ্রামে এসে প্রথমে ওই ব্যক্তিকে আটক করে। কিন্তু পুলিশের হাত থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয় জনতা। এ বিষয়ে বিশেষ তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজ়দার বিশেষ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন।
এই ঘটনাটি মনে করিয়ে দিচ্ছে শিয়ালকোটের কথা। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর শিয়ালকোটের পোশাকের দোকানের ম্যানেজার, শ্রীলঙ্কার অধিবাসী, প্রিয়ন্থা কুমারাকে পিটিয়ে মারে এক দল লোক। তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছিল ধর্ম অবমাননার। গণপিটুনির পরে তাঁর গায়ে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল প্রায় ৮০০ জন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলেন। কিন্তু ছবিটা যে পাল্টায়নি, তা স্পষ্টজঙ্গল ডেরা গ্রামের ঘটনা থেকে।
রাজশাহীর সময় / এফ কে