যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) খাদ্য ও জ্বালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয়দের চলমান চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৭৫০ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাস জানায় নতুন এ অর্থায়নের ফলে ইউএসএআইডি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডব্লিউএফপির সঙ্গে মিলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার পাশাপাশি অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক সহায়তা দিতে পারবে। এ নতুন তহবিল ব্যবহার করে প্রায় ছয় লাখ মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ ও জীবন রক্ষাকারী সহায়তা দেয়া সম্ভব হবে।
বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়েছে, খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার মধ্যে রয়েছে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত বিতরণ কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ভাউচার বা রসিদের মাধ্যমে প্রধান খাদ্যশস্য ও তাজা শাকসবজি সংগ্রহের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো কর্মসূচিকে সহায়তা করা।
এই কর্মসূচিগুলোর উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী হবে ৩৩টি শরণার্থী শিবির ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী-অধ্যুষিত ১৩০টি এলাকার বাসিন্দারা। এ ছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির মাধ্যমে ডব্লিউএফপি শরণার্থী শিবিরগুলোর অভ্যন্তরে অবস্থিত জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য নির্মিত অবকাঠামোগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।
বাংলাদেশ প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে যাদের মধ্যে বেশিরভাগ জাতিগতভাবে রোহিঙ্গা। ছয় বছর আগে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূল অভিযান এবং ভয়ংকর নৃশংসতা ও নির্যাতনমূলক অভিযান চালায়। ৭৭৪,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যাদের বেশিরভাগ শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছে।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ইউএসএআইডি রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার পাশাপাশি তাদের আশ্রয় দেয়া উদার স্থানীয় বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীকেও সহায়তা করা অব্যাহত রাখবে।