০২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:৪০:২৩ অপরাহ্ন


সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের তৈরি থাকতে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০১-২০২৩
সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের তৈরি থাকতে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের তৈরি থাকতে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া যায় সে বিষয়ে ডিসিদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে অংশ নেয়ার পর তিনি বলেন, ‘দেশবাসী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাচ্ছে। জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া এখন দায়িত্ব। আমরা এসব কথাই বলেছি জেলা প্রশাসকদের।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম। তারা দেশপ্রেম, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা পরিপূর্ণ। কাজেই নির্বাচনের সময় যা প্রয়োজন তারা করবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবে। তবে আমাদের তখন মানে নির্বাচনের সময় করণীয় কিছু থাকবে না। আমাদের মন্ত্রণালয়গুলো তখন কেবল রুটিনওয়ার্ক (নিয়মিত কাজ) করবে। মূল দায়িত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। পুলিশ, বিজিবি ও আনসারসহ নিরাপত্তা বাহিনীও তাদের হাতে ন্যস্ত হবে।’

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকেই মরণনেশা ইয়াবা কারবারিতে জড়িত বলে জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান। এ কারণে তাদের কাঁটাতারের বেড়ায় আবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মাদক নিয়েও কথা হয়েছে। এটি আমাদের কাছে একটি চ্যালেঞ্জ। মাদকের ভয়াবহতা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এখন মাদকের ডিমান্ড (চাহিদা) হ্রাস করতে হবে। মাদক নির্মূলে আমরা তিনভাগে ভাগ করে কাজ করছি। প্রথমত, ডিমান্ড হ্রাস করতে হবে। এ জন্য ডিসিদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদরাসা সব জায়গায় যেন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি (ডিসি) খেয়াল রাখেন। এই ডিমান্ড হ্রাস করার উপায় তারা বের করবেন। আর এটা না করতে পারলে আমাদের যে স্বপ্ন ২০৩০, ২০৪‌১, তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

আসাদুজ্জামান বলেন, কারাগারগুলো একটির পর একটি আধুনিকীকরণ করতে যাচ্ছি। ডিসিদের সঙ্গে তা নিয়েও কথা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। পাসপোর্ট, ইমিগ্রেশনে আমরা আধুনিক জগতে চলে গেছি। এখন আমরা ই-ভিসার জগতে প্রবেশ করেছি।

সীমান্তে আট কিলোমিটারের বাইরে বিজিবি গুলি করলে নির্বাহী তদন্তের একটি প্রস্তাব ছিল, এ বিষয়ে আপনারা কী বলেছেন জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সিনিয়র সচিব এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাহাড়ে সন্ত্রাস নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দেখুন, পার্বত্য চট্টগ্রামের এ পরিস্থিতি আজকের না, অনেকদিনের। সেখানে অনেক দল-উপদল কাজ করে। আপনারা তা জানেন। সেই জন্য ওই তিনটি জেলা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছিল। শান্তি চুক্তি হয়েছে। সে অনুসারে আমরা তিন জেলায় কাজ করছি। কিন্তু তারপরেও কয়েকটি গোষ্ঠী অস্ত্র সমর্পণ না-করে অতর্কিত সামনে চলে আসছে। কিন্তু এদের সঙ্গে সারা দেশের জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো সংযোগ নেই।

মন্ত্রী বলেন, জঙ্গির উত্থান যেটা ঘটাতে চেয়েছিল তা সম্ভব হয়নি। আমাদের দেশের মানুষ কোনোদিনই জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি। কিন্তু তারপরেও কেন হচ্ছে? বিদেশ থেকে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র, ইঙ্গিত আমাদের এখানে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ কথা আমি সবসময় বলেছি। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের সবসময় প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন, মা তার ছেলেকে নিয়ে এসে র‍্যাব-পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। যা আপনারা দেখেছেন। কাজেই জঙ্গি দমন করেছি। আমরা (জঙ্গিদের) গোড়া উঠিয়ে দিতে পারিনি। মাঝে মাঝে দু-একটা ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো (জঙ্গিরা) আমাদের এখান থেকে চলে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা শুনেছি। সেই ঘাঁটিটাও সমূলে বিনষ্ট করে দিয়েছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প, জঙ্গি আমাদের অভ্যন্তরীণ (সন্ত্রাস) এক জিনিস না।

এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কথা সবসময় বলে এসেছি, তারা যদি দীর্ঘদিন এখানে থাকে তাহলে তা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তা সবসময় বলে এসেছেন। জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের কাছে তিনি আবেদন করেছেন যে এই জনগোষ্ঠী সবকিছু হারিয়ে এখানে এসেছে। কাজেই যে কোনো সন্ত্রাসবাদ তাদের প্রলুব্ধ করতে পারে।

সেই ধরনের ঘটনা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রেডিক্ট করতে পেরেছেন বলেই তিনি সবসময় তাদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইয়াবা কারবারির সঙ্গে জড়িত। সে জন্যই কাঁটাতারের মাধ্যমে তাদের এক জায়গায় আবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেছি বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান বলেন, কিন্তু ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে যারা ইয়াবার পাচারে সম্পৃক্ত, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। রোহিঙ্গাদের সবাই এ কাজ করছে না, তাদের মধ্যে কিছু লোক এ কাজ করছে। নিজেরা খুনোখুনি করছে। নিজেরা রক্তাক্ত করছে। তাদের মাঝিকে মারছে। এগুলো আপনারা দেখছেন। এটি অস্বাভাবিক কিছু না। এগুলো হতে পারে আমরা আগেই কল্পনা করেছি। কাজেই আমাদের এপিবিএন আমাদের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা সবাই সক্রিয় আছে। তবে এগুলোর বিস্তার ঘটবে না।