২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৫:২৮:৩৭ পূর্বাহ্ন


২০২৬ সালে চালু হবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০১-২০২৩
২০২৬ সালে চালু হবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর ফাইল ফটো


২০২৬ সালের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড় জাহাজ বার্থিং দেশের জন্য অহংকারের বিষয়। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের হৃদপিণ্ড। এটি স্লোগান নয়, বাস্তবতা। এটি বন্ধ হলে দেশের অর্থনীতি থমকে যায়। তবে বন্দর গত ১৪ বছরে বন্ধ হয়নি। এটি বন্ধ হয়নি বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নে এই বন্দরের ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার সময় বাংলাদেশ ৬০তম অর্থনীতির দেশ ছিল। মাত্র ১৪ বছরে এখন বাংলাদেশ ৩৫তম অর্থনীতির দেশ হয়েছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বন্দরে এক সময় জাহাজজট ছিল। এখন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি জাহাজ থেকে ওঠা-নামা সম্পন্ন হয়। প্রযুক্তির কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। গত বছর বন্দর দিয়ে ৩১ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। প্রযুক্তির কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। শিগগিরই এটি চালু করে দেওয়া হবে। ২০২৪ সালে বে-টার্মিনাল চালু করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। করোনায় দু-বছর চলে গেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও একটু সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা বসে নেই। সাড়ে ৩ হাজার মিটারের বে-টার্মিনাল বিভক্ত করা হয়েছে। ২০২৫ সালের শেষে অথবা ২০২৬ সালের শুরুতে বে-টার্মিনালের বন্দরের অংশটা চালু করতে পারব। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে আমরা যখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো করছি তখন দাতাগোষ্ঠীরা আমাদের পেছন পেছন হাঁটছে। বিশ্বব্যাংক বলতে বাধ্য হয়েছে পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়া তাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আইএমএফ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সমালোচকরা বলছে আইএমএফের কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করেছি। এটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, আমরা যখন ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি করি তখন অনেকেই বলেছিল বাংলাদেশ ভারত হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ভারত হয়নি। অনেকেই বলে বাংলাদেশে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসতেছে না। আপনারাই জানেন এই বন্দরে বিনিয়োগের জন্য বিদেশিদের কি পরিমাণ প্রস্তাব আসে। এসব বিনিয়োগ নেব কি না এই সিদ্ধান্ত আমাদের। আগামী দিনে সমগ্র পৃথিবীর বিনিয়োগকারীরা এখানে আসবে।

সভাপতির বক্তব্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বন্দরে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়েছে। এটি বন্দরের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যুদ্ধের পর তিনি দেশে ফেরার ৩ মাসের মধ্যেই এই বন্দরে এসেছিলেন। তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বন্দর সচল করেছেন। পরবর্তীতে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা উদ্যোগে বন্দরের অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, করোনা ও নানা সংকটের মধ্যেও বন্দর প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। এ বছর বন্দরে ২ শতাংশ বেশি কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে। একই সঙ্গে বন্দর ৩ শতাংশ বেশি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে।

এ সময় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। এছাড়া নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুব আলমসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।