২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:৪৩:৪৪ অপরাহ্ন


সমাবেশ শেষের অপেক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ৩২ হাজার ফোর্স
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১২-২০২২
সমাবেশ শেষের অপেক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ৩২ হাজার ফোর্স সমাবেশ শেষের অপেক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ৩২ হাজার ফোর্স


রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় বিকেল সাড়ে ৪টা। গণসমাবেশ শেষ হওয়ার আগে সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), আনসার ও এপিবিএন সদস্যরা। সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তায় কাজ করছে ৩২ হাজার ফোর্স।

সরেজমিনে গোলাপবাগ মাঠ প্রাঙ্গণ, কমলাপুর রেলস্টেশন, মতিঝিল, নয়াপল্টন, কাকরাইল, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিএনপির সমাবেশ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত যেভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা দায়িত্ব পালন করেছি, সমাবেশ শেষ হওয়ার পরেও যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা এড়াতে একই রকম সতর্ক অবস্থান নেবো। মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরে অবস্থান নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সমাবেশের আগে ও পরে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে এ ব্যাপারে মোতায়েন করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ শেষেও নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে ডিএমপি সদস্যরা।
র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন, নিরাপত্তা জোরদারে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির সমাবেস্থলের ওপর র‌্যাবের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নজরদারি চলমান। গণসমাবেশকে কেন্দ্র
তিনি বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাবের নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার রয়েছে। এছাড়া যে কোনো ধরনের হামলা ও নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, স্থান ও প্রবেশপথসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র‌্যাবের চেকপোস্টে নিয়মিত তল্লাশি কার্যক্রম চলমান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ সহায়তা করছে। যদি কেউ নাশকতা করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা ঘিরে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুপুরে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এ কে এম হাফিজ আক্তার সাংবাদিকদের বলেছেন, বিএনপির গণসমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, দলটির নেতাকর্মীরা ঘরে না ফেরা পর্যন্ত নয়াপল্টনসহ পুরো রাজধানী নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে।
হাফিজ আক্তার বলেন, নয়াপল্টনে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে, কারণ আমাদের কিছু ইন্টেলিজেন্স আছে। এখানে যে কোনো ধরনের নাশকতা হতে পারে। যদিও আমরা আশা করছি সেটা হবে না। কিছু গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকে, তবে বিএনপির গণসমাবেশ যদি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এসব নিরাপত্তা বলয় উঠে যাবে। ঢাকা শহর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের পাশে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পর রাতেই গোলাপবাগ মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মী অবস্থান নেন। শনিবার দুপুর নাগাদ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। মাঠে জায়গা না হওয়ায় আশপাশের সড়কগুলোতে নেতাকর্মীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

এদিকে গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করেছে বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী দিনে দলটি আন্দোলন করবে। গণসমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ ঘোষণা করেন। বিএনপির মিত্র রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সব গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করে এ দফাগুলো ঠিক করা হয়েছে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ।