২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১২:৫২:২২ অপরাহ্ন


৩১ নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে পাবনা বিসিকে
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১২-২০২২
৩১ নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে পাবনা বিসিকে ৩১ নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে পাবনা বিসিকে


জমতে শুরু করেছে পাবনা বিসিক শিল্পনগরী। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য এ শিল্পনগরী স্থাপন করা হলেও ভারী শিল্প উদ্যোক্তারা পিছিয়ে ছিলেন। তবে এবার নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও ৩১ শিল্প প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে দেশের অন্যতম পুরনো এ শিল্পনগরী খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য পরিচিতি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পাবনা বিসিক শিল্পনগরীর আয়তন ইতোমধ্যে ২ দফায় বাড়িয়ে এখন ১২৫ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৬২ সালে ৮৩ একর জায়গায় প্রতিষ্ঠা হয় পাবনা বিসিক শিল্পনগরী। ধীরে ধীরে প্রকল্প এলাকা বেড়ে ১১০ একর জায়গায় ৪৭৪ পস্নটে ১৭২ কারখানা স্থাপিত হয়। পরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ায় ২০১৬ সালে বিসিক এলাকা আরও ১৫ একর বাড়ানো হয়। নতুন এলাকায় আরও প্রায় ১০০ পস্নটে ৩১ শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে উৎপাদন শুরু করলেও, এখনো ১২ শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন। নতুন করে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিছু ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। পাবনা বিসিক কার্যালয় সূত্র জানায়, এ শিল্পনগরীর ২০৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে ১৮৩টি পুরোদমে চালু রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। শিল্পনগরীতে সব প্রতিষ্ঠান চালু হলে ১৩-১৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পাবনা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বিসিকের পুরনো পস্নটগুলোয় প্রতিষ্ঠিত কারখানাগুলোর বেশিরভাগই চালু আছে। পুরনো ইউনিটে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি বছর ৮০০ কোটি টাকার বেশি পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে।' তিনি জানান, পাবনা বিসিক শিল্পনগরী এলাকার পুরনো ইউনিটে চলমান কারখানাগুলোর বেশিরভাগই খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। চাল, আটা, ডাল, তেলসহ বেশ কয়েকটি খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এখানে আছে। সম্প্রসারিত এলাকায় ২৮৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি বছর প্রায় ৭৬৫ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হবে। সম্প্রসারিত এলাকায় স্টিল কারখানা, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। এক সময় পুরনো পদ্ধতির চালকলের আধিক্য ছিল। এখন সেগুলো অত্যাধুনিক রাইস মিল। স্থাপিত হয়েছে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এ আর স্পেশালাইজড রাইস মিল। এ ছাড়া এখানে অটো ফ্লাওয়ার মিল, ডাল মিল, তেল মিলসহ অন্য খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চালু আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিসিকে থাকা শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন চাল, ৫০০ মেট্রিক টন আটা, ৪০০ মেট্রিক টন ডাল, প্রায় ২০০ মেট্রিক টন তেল উৎপাদিত হচ্ছে, যা দেশের বাজারে খাদ্যপণ্যের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে। 'বিসিক শিল্পনগরীর স্টেট অফিসার আব্দুল লতিফ বলেন, 'খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, অটোমোবাইল কারখানা, স্টিল কারখানাসহ বেশ কয়েকটি ভারী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করেছে। পাবনা বিসিকের উৎপাদিত পণ্য থেকে প্রতি বছর প্রায় শত কোটি টাকার পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রাণচাঞ্চল্য পেয়েছে।' তিনি জানান, শিল্পনগরীতে গ্যাস সরবরাহ সুবিধা, নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহের জন্য নিজস্ব সাব-স্টেশনসহ উৎপাদন সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক খাইরুল বাশার বলেন, 'পাবনা বিসিকে উৎপাদন সহায়ক পরিবেশ থাকলেও উৎপাদিত পণ্য পরিবহণ নিয়ে এখনো দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিসিক এলাকার রাস্তা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পণ্য পরিবহণে এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।' তিনি আরও বলেন, 'বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পণ্য ওঠানামায় সমস্যা হয়।' শিল্পনগরীর ডিজিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, 'ইতোমধ্যে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজ চলমান আছে। শিগগিরই এ সংকট কেটে যাবে।'