২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’ গঠনের পর এই টাস্কফোর্সের একটি নির্বাহী কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যারা, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুপারিশ দেবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে এই কমিটি। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আগামী নির্বাচনে তাদের স্লোগান হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে এই কথা বলেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এই নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুপারিশ দেবে এই কমিটি।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বলতে স্মার্ট নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার গড়ে তোলা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রম স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তর হবে। এ জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং এর উন্নয়নে একটি দক্ষ ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন কার্যক্রম ডিজিটাইজেশন করা হবে।
টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির কর্মপরিধিতে আরও বলা হয়, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, আইন ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামো সৃষ্টি এবং সব পর্যায়ে তা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনা দেবে এই কমিটি।
এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রমকে স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তরের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন, স্মার্ট ও সর্বত্র বিরাজমান সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক এবং বৈজ্ঞানিক পরিমণ্ডলে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিধিমালা প্রণয়ন, রপ্তানির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নীতি প্রণয়ন ও সময়াবদ্ধ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে ব্যবস্থা, আর্থিক খাতের ডিজিটাইজেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এই কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’-এর গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোও বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়াও হবে এই কমিটির কাজ।
কারা আছেন এই কমিটিতে
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এ নির্বাহী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন বাণিজ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এ টু আই প্রকল্পের পরিচালক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের সভাপতি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব (সদস্যসচিব)। অবশ্য কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য নিতে পারবে (কো-অপ্ট)। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।