রমজান মাসে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তেল, চিনি, ডাল ও ছোলা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা জোরদার করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় দেশের তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের এই নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। ব্যাংকার্স সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক। তিনি বলেন, রোজার সময় কোনো পণ্যের যাতে ঘাটতি না হয় এবং মূল্য স্থিতিশীল থাকে সে জন্য তেল, চিনি, ডাল, ছোলার এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সভায় উপস্থিত ব্যাংকাররা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কোনো নীতিসহায়তা দরকার হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেওয়া হবে। মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক খাদ্য পণ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষিঋণ বিতরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। গত চার মাসে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৩৩ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। এটা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মেজবাউল হক বলেন, যে সব ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে না তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত নিয়ে অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর জন্য প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, প্রতিবন্ধীদের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাপ প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারে কিছু সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা প্রতিবন্ধীবান্ধব অ্যাপ চালু করে।
মেজবাউল হক আরও বলেন, টাকা জমা দিতে গেলে জনগণকে হয়রানি না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এখন থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা দিতে গেলে গ্রাহকের কাছে অর্থের উৎস জানতে চাইবে না ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নির্দেশনায় সম্মতি দিয়েছেন ব্যাংকাররা। তবে ১০ লাখ টাকার বেশি জমা দিলে জাতীয় পরিচয়পত্র, টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইবে ব্যাংক।
মুখপাত্র বলেন, ‘অর্থ পাচার রোধে অপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনার ওপর নজর রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমরা মূলত হুন্ডি কমানোর চেষ্টা করছি। রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হুন্ডির চাহিদা যেখান থেকে তৈরি হয়, আমরা সেটা খোঁজার চেষ্টা করছি। আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ করার চেষ্টা করছি।’
মেজবাউল হক বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ তদারকি বহাল আছে। ইসলামী ব্যাংকে আমানতের পূর্ণ নিশ্চয়তা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের আমানত ও ডিপোজিট সম্পূর্ণ নিরাপদ। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’