২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:২০:০২ পূর্বাহ্ন


পদ্মা রেলপথ ঘিরে নতুন স্বপ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১২-২০২২
পদ্মা রেলপথ ঘিরে নতুন স্বপ্ন পদ্মা রেলপথ ঘিরে নতুন স্বপ্ন


পদ্মা সেতুর সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলে রেল যোগাযোগের জন্য নতুন রেলপথ তৈরি হচ্ছে। মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ওপর দিয়ে বসেছে নতুন এই রেলপথ। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল পস্নাজা থেকে শিবচর হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত রেললাইনের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে শিবচর থেকে ভাঙ্গা হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত চালু হবে ট্রেন। এদিকে বর্তমানে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে। নতুন এই রেললাইনে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পরীক্ষামূলক রেল ইঞ্জিন চালানো হয়। নতুন এই রেলপথ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা তথা পদ্মাপারের মানুষের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। রেল চলাচল শুরু হলে উপার্জনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে। খুব সহজে এবং অল্প খরচে এই অঞ্চল থেকে পণ্যসামগ্রী অন্যান্য স্থানে পরিবহণ করা যাবে; বিশেষ করে শিবচরের পদ্মা নদীর ঘাটকেন্দ্রিক স্বল্প আয়ের মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হবে। এই রেলপথ তাই নতুন করে স্বপ্ন জাগাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। শিবচরের পাঁচ্চর এলাকার একাধিক ফল ব্যবসায়ী বলেন, পদ্মা সেতু রাজধানীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগকে যেমন সহজ করে দিয়েছে, তেমনি রেল চালু হলে এই যোগাযোগ আরও সহজ হয়ে যাবে। ট্রেনে চড়ে যেকোনো জায়গায় কম খরচে এবং ঝামেলা ছাড়াই পৌঁছানো যাবে। শিবচর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ট্রেন চালু হলে আমের মৌসুমে সরাসরি আমরা রাজশাহী থেকে আম এনে বিক্রি করতে পারব। খরচও কমে যাবে। কম দামেও ভোক্তারা কিনতে পারবেন। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চল থেকে সবজিসহ যেকোনো পণ্যসামগ্রী সরাসরি শিবচর এনে বিক্রি করা যাবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শুরু হয়ে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল পস্নাজা পর্যন্ত রেললাইনের কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে। ভাঙ্গার মালিগ্রাম, শিবচরের বাঁচামারা এবং কুতুবপুর এলাকায় রয়েছে মোট তিনটি জংশন। এগুলোর কাজও প্রায় শেষের দিকে। জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোল পস্নাজা পর্যন্ত রেলপথের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম, শিবচরের বাঁচামারা ও কুতুবপুরসংলগ্ন এলাকায় নির্মাণাধীন রয়েছে তিনটি জংশন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শিবচর হয়ে পদ্মা সেতু পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার রেলপথে ১ নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছিল গ্যাংকার। রেললাইন-সংলগ্ন শিবচরের পদ্মাপাড়া এলাকার বাসিন্দা জলিল শেখ বলেন, বাড়ির পাশেই রেললাইন। মাঝেমধ্যেই ট্রেনের ইঞ্জিন দিয়ে কয়েকটি বগি চলতে দেখি। বেশ ভালো লাগে। আগে রেললাইন বলতে উত্তরাঞ্চলকেই বুঝতাম। এখন আমাদের এলাকাতেও ট্রেন চলবে। এই রেললাইন ঘিরে এই এলাকার মানুষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্বল্প আয়ের মানুষ, শ্রমজীবীরা রেলকেন্দ্রিক নতুন কাজের সন্ধান পাবে। জংশন এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা বা হকারি করেও জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে অনেকে। শিবচরের কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান মাদবর বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করছে এখন। রাজধানী ঢাকা চলে এসেছে ঘরের কাছে। রেল চালু হলে নতুন দিক উন্মোচন হবে যোগাযোগের। পদ্মা সেতুর পর রেল চালু হলে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে এই এলাকার মানুষ। ভাঙ্গা রেলস্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙ্গা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোল পস্নাজা পর্যন্ত রেল ইঞ্জিন চালানো হয়েছে। এই ইঞ্জিন মূলত গ্যাংকার নামে পরিচিত। সফলভাবেই সেটি ভাঙ্গা থেকে জাজিরা টোল পস্নাজা পর্যন্ত পৌঁছায়।