০১ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:২৮:০৬ অপরাহ্ন


খাদ্য সঙ্কট মেটাতে বাড়ছে হাইব্রিড জাতের আবাদ
অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১১-২০২২
খাদ্য সঙ্কট মেটাতে বাড়ছে হাইব্রিড জাতের আবাদ খাদ্য সঙ্কট মেটাতে বাড়ছে হাইব্রিড জাতের আবাদ


দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এ সংস্থাটির গবেষকরা ইতোমধ্যে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধান আবিষ্কার করেছেন। তাদের উদ্ভাবিত এসব জাতকে ব্রি ধান বলা হয়।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান ৮৭ আবাদ করে কৃষকরা খুশি। আমন মৌসুমে অন্যান্য সব ধানের জাতকে ছাড়িয়ে গেছে এটি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন ব্রি ধান ৮৭ এর আবাদ ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
কৃষিবিভাগ জানিয়েছে, ব্রি ধান ৮৭ ব্লাস্ট প্রতিরোধী। গাছগুলো শক্ত, শীষ বড়। এসব বাতাসে হেলে পড়ে না। এজন্য এবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ জাতের ধানের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। পোকার আক্রমণ নেই। জীবনকালও কম। হেক্টরপ্রতি সাড়ে ৭ টন ফলন পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলে এখন কৃষকের কাছে জনপ্রিয় জাতটি।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বলছে, হোমোজাইগাস কৌলিক সারি নির্বাচনের পর তিন বছর ফলন পরীক্ষা করে পরে ওই কৌলিক সারিটি আমন ২০১৬ মৌসুমে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হয়, যা ২০১৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক আমন মৌসুমে চাষের জন্য ছাড়করণ করা হয়েছে। এরপর গত বছর থেকে জাতটির বাণিজ্যিক চাষাবাদ জোরদার হয়েছে।
ব্রি বলছে, পূর্ণ বয়স্ক ব্রি ধান ৮৭ এর গাছের গড় উচ্চতা ১২২ সেন্টিমিটার। এ জাতের গাছের কাণ্ড শক্ত তাই গাছ লম্বা হলেও ঢলে পড়ে না। চালের আকার আকৃতি লম্বা ও চিকন। ভাত ঝরঝরে। এ ধানের ১ হাজার পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৪.১ গ্রাম। এ চাল রফতানিযোগ্য। গাছ বড় বলে এ ধানের খড় থেকেও ভালো লাভবান হয় চাষিরা। যেখানে স্বর্ণা জাতের ধানের জীবনকাল ১৪৫ দিন সেখানে ব্রি ধান ৮৭ চিকন আমন ধানের জীবনকাল মাত্র ১২৭ দিন। স্বর্ণা ধান পাকার ১৫ দিন আগেই কাটা যায় ব্রি ধান ৮৭ জাতের চিকন আমন ধান।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা যেমন রাজশাহী নাটোর এসব এলাকায় ব্রি ধান ৮৭ আবাদ হচ্ছে। বিশেষ করে নাটোরে
ইতোপূর্বে যে সব জমিতে আখ চাষ করে কৃষকরা লোকসানে পড়তেন সে সব জমিতে ব্রি ধান ৮৭ চাষ করে তারা এখন খুবই লাভবান হচ্ছেন। যে সব জমিতে আম বাগান রয়েছে সেখানেও আম গাছের ফাঁকে ফাঁকে এই ধান কৃষকরা চাষ করছেন। এতে তারা আশাতীত ফলনও পাচ্ছেন। কৃষকরা বলছেন, এ জাতের ধানে বিঘায় প্রায় ২২ থেকে ২৪ মণ ফলন হয়। এ জাতের চালও বেশ চিকন। স্বর্ণা বা যে কোনো জাতের চেয়ে ধানের দামও বেশি। এক সময় আম বাগানের জমি সারা বছর খালি পড়ে থাকত। ব্রি ধান ৮৭ এর গাছ বেশ শক্ত হওয়ায় কোনো ক্ষতি হয় না। কৃষকরা আমের পাশাপাশি ধানও চাষ করছে। এতে ফলনও ভালো হচ্ছে।
ব্রি এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ব্রি উদ্ভাবিত নিত্যনতুন এ জাতগুলো খাদ্যসঙ্কট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। আমাদের উদ্ভাবিত ১০৮টি জাতের মধ্যে অনেকগুলো উচ্চ ফলনশীল। এর মধ্যে ব্রি ধান ৮৭ জাত চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এটা ঝড় ও পোকার আক্রমণ মোকাবিলা করতে সক্ষম। এছাড়া এ ধান মাত্র ১২৭ দিনে পরিপক্ব হয়। এসব উচ্চ ফলনশীল জাত চাষের কারণে আগামীতে খাদ্য আমরা রফতানি করতে পারবো।