বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে কোথাও ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনভোগান্তি বাড়িয়ে কাউকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
আজ রোববার গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ কথা জানান শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানান। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের এ সভায় ৫টি পৌরসভা ও ৫১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানান, দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচার নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে, এ প্রচারণা চালাচ্ছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি বড় জমায়েত করবে তাতে আপত্তি নেই, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করুক। দলীয় কার্যালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ৪০-৫০ হাজার লোক ধরবে। তাদের বেশি লোকের প্রস্তুতি, সে জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন নয়?
বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ থেকে ৬ ডিসেম্বর এগিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ বলে বৈঠকে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেখানে বলেন, কারও গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার ইচ্ছে আমাদের নেই। সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে বলতে চাই, বিএনপি বহু লোকের সমাবেশ ঘটাবে ঘটাক, উদ্যান তো দিতেই চাই। কোনো অবস্থাতেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার সুযোগ নেই।
একাধিক নেতা বলেন, বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বের সব দেশেই বর্তমান পরিস্থিতি নাজুক। সেখানে আমরা বিভিন্ন পলিসি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, সফল হচ্ছি।
বিলাসবহুল পণ্যের এলসি খোলার ব্যাপারেও বিধিনিষেধ রয়েছে। এ জন্য ‘ব্লুমবার্গ’ অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে বলে ওই নেতা জানান। তিনি বলেন, গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছে। সেখানে এ সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো নিয়ে নজরদারি করা হবে।
ছয় মাস স্বাভাবিকভাবে চলার মতো সবকিছুই তার সরকার মজুত রেখেছে বলে বৈঠকে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে এ অবস্থা কেটে যাবে।
ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিয়ে একধরনের অপপ্রচার চলছে দেশে চলছে বলে নেতাদের বৈঠকে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আন্ডার ভয়েস ও ওভার ভয়েস এলসি খোলার ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে। কারণ ওভার ভয়েস করে টাকা পাচারের সুযোগ থাকে এবং আন্ডার ভয়েস করে শুল্ক ফাঁকি দিতে চায়, সে জন্য এ ব্যাপারগুলোতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ও নিয়মানুযায়ী এলসি খোলা নিয়ে কোনো বাধা নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যে সমস্যা তা আগামী জানুয়ারিতে কেটে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন সরকারপ্রধান।