০১ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:২২:৩৪ অপরাহ্ন


নতুন পোশাকে মাঠে মাদক কর্মকর্তা-কর্মচারী
অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-১১-২০২২
নতুন পোশাকে মাঠে মাদক কর্মকর্তা-কর্মচারী নতুন পোশাকে মাঠে মাদক কর্মকর্তা-কর্মচারী


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন পোশাকে মাঠে নেমেছেন। গাড়িচালক থেকে অতিরিক্ত পরিচালক পর্যন্ত সবাই এখন নতুন পোশাকে অফিস করছেন। গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। নভেম্বরের শুরু থেকেই বাধ্যতামূলকভাবে সবাই একই পোশাক পরিধান করে কাজ করছেন।

সম্মিলিতভাবে একই পোশাক ব্যবহার করায় ডিএনসির কাজে গতি এসেছে। ১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরই নতুন এ পোশাকে মাঠে নামে ডিএনসি।

এর আগে, ২০১৪ সাল থেকে প্রজ্ঞাপনের আলোকে ডিএনসির সিপাহি থেকে পরিদর্শক পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খাকি রঙের পোশাক পরতেন। এ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষও ছিল বলে জানা যায়। এরপর গত বছরের ২৩ মে নতুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ডিএনসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘টার্কিশ ব্লু’ রঙের পোশাক নির্ধারণ করা হয়। যেখানে অন্যান্য বাহিনীর মতো ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক পর্যন্ত সবাই এক রঙের পোশাক পরিধান করেন। চলতি বছরের ২১ জুলাই ডিএনসি সদর দফতর ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন পোশাক চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত জানায়। পোশাক তৈরির পর অন্য একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাকের সঙ্গে ‘রঙের মিল’ আছে উল্লেখ করে আপত্তি আনা হয় ডিএনসির নতুন এ পোশাকের ওপর। যে কারণে আগস্টের শেষ দিকে ডিএনসি সদর দফতর থেকে মৌখিক নির্দেশনায় পোশাক পরিধানের বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়। ডিএনসি কর্মচারীদের (পোশাক ও সামগ্রী প্রাধিকার) বিধিমালা-২০২১ নামে ২০২১ সালের ২৩ মে জারি করা এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী অতিরিক্ত পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, প্রসিকিউটর, পরিদর্শক, সহকারী প্রসিকিউটর, উপপরিদর্শক, সহকারী উপপরিদর্শক, সিপাহি, ওয়্যারলেস অপারেটর ও গাড়িচালক পর্যন্ত সবাইকেই পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে টার্কিশ ব্লু রঙের সেলুলার কাপড়ের বুকখোলা ফুল ও হাফহাতা শার্ট, ডিপ নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট ও অধিদফতরের লোগোসংবলিত টুপি পরিধান করবেন কর্মকর্তারা। আর নারীরা টার্কিশ ব্লু রঙের বুশ শার্ট ও ডিপ নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট পরিধান করবেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত পরিচালক থেকে সহকারী উপপরিদর্শক পর্যন্ত সবার র‌্যাঙ্ক ব্যাজ থাকবে। তবে মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পরিচালকরা এ পোশাক পরিধান করবেন না। এর কারণ হিসেবে কর্মকর্তরা জানান, অতিরিক্ত পরিচালক পর্যন্ত বিভাগীয় লোকজন দায়িত্ব পালন করলেও এর ওপরের পদের কর্মকর্তারা আসেন বিসিএস প্রশাসন ও পুলিশ সার্ভিস থেকে। পরিচালক (অপারেশন) পদে পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং পরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মহাপরিচালক পদে প্রশাসন পদের কর্মকর্তারা সাধারণত দায়িত্বে থাকেন। এসব কর্মকর্তার সংখ্যা ছয়। ডিএনসি সূত্রে জানা গেছে, সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর একই পোশাক পরিধানের বিষয়ে সুপারিশ করেছিল ডিএনসি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে ঊর্ধ্বতন ছয় কর্মকর্তা, মাদক নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসক ও মাদকের কেমিক্যাল ল্যাবসংশ্লিষ্ট ছাড়া সবার ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করা হয়। ডিএনসি সদর দফতর থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সবাই একই পোশাকে অফিস করছেন। পোশাকে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। পোশাক পরিহিত আইডি কার্ড সবাই ব্যবহার করছেন। ডিএনসির কয়েকজন কর্মকর্তা বলছেন, ইতোমধ্যে দেশের ৬৪ জেলা, বিশেষ জোন টেকনাফ, আট বিভাগীয় শহর, চার মহানগরসহ ডিএনসি সদর দফতরের ১ হাজার ৯০৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পোশাক পরে কাজ শুরু করেছেন। তারা এ পোশাক পেয়ে নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য মনে করছেন। জনসাধারণের কাছে একই পোশাকে তাদের পরিচিতি পাচ্ছে। তবে বিভিন্ন বাহিনীর মতো ডিজি পর্যন্ত একই পোশাক পরলে নিজেদের ধন্য মনে করতেন ডিএনসি কর্মকর্তারা।

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পোশাকে আমরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি। বাহিনীর পোশাক পেয়ে সবার মধ্যে চাঙাভাব ফিরে এসেছে। এতে কাজের গতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। পোশাকের কারণে সবাই একটি পরিচিতি পেয়েছে। পোশাকের কারণেই বাহিনীর অপারেশনাল কাজে টিম স্পিড বৃদ্ধি পেয়েছে।’ ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, ‘বাহিনীর নতুন পোশাকের কারণে কাজের গতি ও জবাবদিহিতা বেড়েছে। আমরা ডিএনসির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবহিত করছি যে, সবাই যেন এ পোশাকের মর্যাদা অক্ষুণœ রাখেন। আমরা সম্প্রতি তিনটি অভিযানে বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করেছি। অস্ত্র ছাড়া এসব অভিযান চালানো ঝুঁকি। ফলে ডিএনসি কর্মকর্তাদের অস্ত্র প্রাপ্তি এখন সময়ের ব্যাপার। কারণ অস্ত্র ছাড়া অভিযানে গেলে ঝুঁকি থেকেই যায়।’ ডিএনসির পরিচালক (অপারেশন্স) কুসুম দেওয়ান বলেন, ‘নতুন পোশাক ডিএনসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে। কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এটা কাজের প্রেরণাও বটে।’