জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে একটি রেজুলেশন (প্রস্তাব) সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ ও সরকারের গৃহীত মানবিক প্রচেষ্টার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বুধবার রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এতে ১০৯টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে, যা এ যাবত সর্বোচ্চ।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, রেজুলেশনটিতে প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, রাখাইন রাজ্যে স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে রেজুলেশনটিতে আঞ্চলিক দেশ ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলো যেমন আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ান গৃহীত পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
রেজুলেশনটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও আইসিসির সহযোগিতার প্রশংসা করা হয়েছে। 'রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং' নীতির আওতায় যাতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে, সে আহ্বানও জানানো হয়েছে।
রোহিঙ্গা নিপীড়নের কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এর আগেও একধিকবার এ ধরনের প্রস্তাব পাস হয়েছে। তবে তাতে মিয়ানমার সরকারের টনক নড়ছে না।