২৭ নভেম্বর ২০২৪, বুধবার, ০৩:৩৬:০৫ অপরাহ্ন


যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন: প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটদের ভরাডুবি, ভাগ্য ঝুলছে সিনেটে
ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১১-২০২২
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন: প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটদের ভরাডুবি, ভাগ্য ঝুলছে সিনেটে ফাইল ফটো


যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদে জয়ের পথে রয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। তারা এরইমধ্যে জয় পেয়েছে ২০৮ আসনে। প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটদের আসন এখন পর্যন্ত ১৮৫। প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ২১৮ আসনে জয় পেতে হয়। সে হিসেবে এখানে রিপাবলিকানদের জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

তবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ এখনও ঝুলছে তিন অঙ্গরাজ্যের উপরে। সেখানে ভোট গণনা শেষ হলেই জানা যাবে সিনেট কাদের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে। ডেমোক্রেটরা যদিও সিনেটের দখল নেয়ার বিষয়ে আশাবাদী। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিনেটে রিপাবলিকানরা জয় পেয়েছে ৪৮ আসনে। আর ডেমোক্রেটদের জয় ৪৬ আসনে।

সিনেটের নিয়ন্ত্রণ কাদের হাতে যাবে তা নির্ধারণে এখন তাকিয়ে থাকতে হবে জর্জিয়া, নেভাদা ও অ্যারিজোনার দিকে। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৫১টি আসন। ফলে আর দুটি আসনে জয় পেলে সিনেট রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।

এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে পরাজয় আঁচ করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন তার সঙ্গে কাজ করেন। বাইডেন বলেন, আমি মনে করি মার্কিনিরা পরিস্কার করে বলেছে, তারা চায় রিপাবলিকানরা আমার সঙ্গেও কাজ করুক। একইসাথে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এ ব্যাপারে আগামী বছরের শুরুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

রিপাবলিকানদের হাতে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ চলে গেলে আগামী দুই বছর নিজের চাহিদা মতো সেখানে আইন প্রণয়ন বা অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে পারবেন না জো বাইডেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিভিন্ন তদন্তও চালাতে পারেন রিপাবলিকানের সদস্যরা। যদিও মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ধারণা করা হচ্ছিলো প্রতিনিধি পরিষদে বিপুল ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে রিপাবলিকানরা। তবে বাস্তবে সেটি দেখা যায়নি। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারালেও রিপাবলিকানদের সঙ্গে ভাল লড়াই করেছে ডেমোক্রেটরা।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নিবাচনে ডেমোক্রেট দল বিস্ময়করভাবে ভালো করায় একে ‘গণতন্ত্রের জন্যে সুদিন’ বলে প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রিপাবলিকান দল এ নির্বাচনে যতোটা ভালো করবে বলে ধারনা করা হয়েছিল বাস্তবে তা ঘটেনি। তারা কেবলমাত্র প্রতিনিধি পরিষদে সামান্য ব্যবধানে জিততে যাচ্ছে।

হোয়াইট হাউসে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, আমি মনে করি গণতন্ত্রের জন্যে এটি একটি ভালো দিন ছিল। এমনকি আমেরিকার জন্যেও। মিডিয়া ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিশাল লাল ঢেউয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। কিন্তু তা ঘটেনি। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি-না সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তার ইচ্ছে আছে। তবে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নেবেন আগামী বছর।

এদিকে চলতি মাসে ৮০ বছরে পা রাখা আমেরিকার সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট বাইডেন তরুণ ভোটারদের প্রশংসা করেছেন যারা গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে ভোট দিয়েছে যা জুন মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়োগ প্রাপ্তদের দ্বারা পরিচালিত সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছিল।

বাইডেন বলেন, ভোটাররা তাদের উৎকন্ঠার বিষয়গুলিতে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। সিনেটে ৩৬ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বাইডেন রিপাবলিকানদের সাথে আরো সমঝোতামূলকভাবে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে রিপাবলিকানদলের যে ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলা হয়েছিল সেটা তারা পায়নি। নির্বাচনের এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং সিনেটে ডেমোক্রেটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাচ্ছে। কিন্তু ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, যদিও কোন কোন দিক থেকে গতকালের নির্বাচন হতাশাজনক ছিল তবু আমার ব্যক্তিগত দিক থেকে এটি একটি বিশাল বিজয়।

ব্যক্তিগতভাবে তিনি যাদের অনুমোদন দিয়েছেন তাদের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেন, জয়ী হয়েছে ২১৯টি আসনে, হার ১৬টিতে। তবে স্বল্প ব্যবধানে হলেও রিপাবলকানরা ২০১৮ সালের পর ৪৩৫ আসন বিশিষ্ট প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পথে রয়েছে।

এদিকে টুইটারে বাইডেন বলেছেন, অন্তত গত ৪০ বছরে ডেমাক্রেট দলের যে কোন প্রেসিডেন্টের সময়কার মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায় এবারে প্রতিনিধি পরিষদে ক্ষমতাসীন দল খুব কম সংখ্যক আসন হারিয়েছে।