২৬ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৪:৪২:২০ পূর্বাহ্ন


আয়েশি প্রকল্প রেখে কল্যাণমুখী প্রকল্পে জোর প্রধানমন্ত্রীর
অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১১-২০২২
আয়েশি প্রকল্প রেখে কল্যাণমুখী প্রকল্পে জোর প্রধানমন্ত্রীর আয়েশি প্রকল্প রেখে কল্যাণমুখী প্রকল্পে জোর প্রধানমন্ত্রীর


একনেকের সভায় উত্পাদন বাড়াতে সব পতিত জমি আবাদের আওতায় আনা এবং স্বাস্থ্য খাতে নতুন হুমকি হয়ে দেখা দেয়া ডেঙ্গু বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় প্রায় ৩ হাজার ৯৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী চাপে থাকা অর্থনীতি টেনে তুলতে বিলাসি প্রকল্পে হাত না দিয়ে উৎপাদনমুখী প্রকল্পে জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে উত্পাদন বাড়াতে সব পতিত জমি আবাদের আওতায় আনা এবং স্বাস্থ্য খাতে নতুন হুমকি হয়ে দেখা দেয়া ডেঙ্গু বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, ‘প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন দুই ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে আরও সাবধানী হতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, অপ্রয়োজনীয় অথবা আয়েশি ধরনের প্রকল্প এখন অনুমোদন দেয়া যাবে না। তবে একটি শর্ত- ছোট প্রকল্প, গ্রামীণ প্রকল্প, কল্যাণমুখী প্রকল্পে আমরা কোনো আপোষ করব না। এগুলোকে আমরা আগে যেভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছি এখনো সেভাবেই অগ্রাধিকার দেব। বড় বড় প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে আমরা না করছি না। সেগুলোকে আরও গভীর চিন্তা-ভাবনা করে অনুমোদন দিতে হবে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই প্রক্রিয়া গত কয়েক মাস ধরেই করে আসছি। এখন বিষয়টিতে আরও জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজে প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন- আপনারা ভাল করছেন, আরও করতে হবে। দুনিয়াব্যাপী টালমাটাল অবস্থা। আমরা টেকসই থাকতে চাই। শুধু অপচয় কমানো নয়, নিজেদের সম্পদ বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। কোনো বিলাস দ্রব্য আমরা ব্যবহার করব না।’

‘জমি খালি রাখা যাবে না। কৃষিতে সাহায়তা দেয়া হবে। সুতরাং চাল, ডাল, সবজি, মাছ, পোলট্রি- এগুলো আমাদের বড় শিল্পের মধ্যে আছে। এগুলোকে আমরা সহায়তা দিয়ে যাব।’, বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

মন্ত্রী মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। আমরা যে যেখানে পারি। যে যা চাষ করবে তার ইচ্ছা।

‘জেলা প্রশাসনকে কেবিনেট সচিব বলেছেন। তারা যেন খুঁজে খুঁজে অনাবাদি জমি বার করেন। জোর করা হবে না। মোটিভেট করে আহ্বান জানিয়ে তা করতে হবে। সরকার প্রধানের এই বার্তা পৌঁছে দেয়া হবে। তাদের ছোটখাটো সহায়তা লাগলে তা দেয়া হবে আমলাতন্ত্রকে এড়িয়ে।’

‘ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। কভিডের সুড়ঙ্গ থেকে আমরা প্রায় বের হয়ে এসেছি। এখন ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য সরকার প্রধান আমাদেরকে বলেছেন।’, বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী আমাদের ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। আমরা তার কাছে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমরা একটি কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। সারা বিশ্বই একটি কঠিন সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেদনে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেছি।

‘আমরা উদীয়মান দেশ। আমাদের মোটামুটি একটি উল্লম্ফন ঘটে গিয়েছিল। সেটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এটা আমাদের বিশেষ ক্ষতি। তবে আমাদের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক আছে। সামনে তা আরও সংহত হবে।

‘আগামী ফসলটা মাঠে রয়েছে। আশা করছি, বড় কোনো ঝড় না হলে তা নির্বিঘ্নে ঘরে উঠে যাবে। তাহলে বড় একটি সুবিধা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের এই সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রায় ৩ হাজার ৯৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত ৭টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৩৯২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩২২ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান; কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।