১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ০৪:০০:০৮ অপরাহ্ন


ইমরানের আগে যেসব নেতা হামলার শিকার হয়েছিলেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১১-২০২২
ইমরানের আগে যেসব নেতা হামলার শিকার হয়েছিলেন ফাইল ফটো


কয়েক মাস আগেই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের ((পিটিআই) প্রধান ইমরান খান দাবি করেছিলেন, তাকে হত্যার চেষ্টা হতে পারে। সেই অভিযোগে মামলাও হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। ইমরান খানের ওপর হামলার ঘটনায় আলোচনায় উঠে এসেছে এর আগেও দেশটিতে যেসব নেতা হামলার শিকার হয়েছিলেন তাদের নাম। এ হামলা পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সংকটকে আরও প্রকট করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের পর থেকে ইমরান খান দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করেন। গত এপ্রিলে পেশোয়ার ও করাচিতে পরপর দুটি সমাবেশে ইমরান খানের সমর্থনে ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায়। আগাম নির্বাচনের দাবিতে ছয় দিন ধরে চলা লাহোর থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চেও বহু সমর্থকের উপিস্থিতি চোখে পড়ে সবার। এই লংমার্চের মধ্যেই ওয়াজিরাবাদের জাফারালি খান চকে ইমরান খানকে গুলির ঘটনা ঘটেছে।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটির কয়েকজন নেতা হামলার শিকার হয়েছেন। যার সবশেষ শিকার ইমরান খান।

লিয়াকত আলি খান: ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডির কোম্পানিবাগে হত্যা করা হয়েছিল পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানকে। মুসলিম লিগের এক জনসভায় বক্তৃতা দেয়ার সময় মঞ্চেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

খান আব্দুল জব্বর খান: খান আব্দুল জব্বর খান ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৫৮ সালের ৯ মে তাকে হত্যা করা হয়। সে সময় জব্বর খান লাহোরে তার ছেলের বাড়ির বাগানে বসে ছিলেন। আসন্ন সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে এক জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

জেনারেল পারভেজ মোশাররফ: ২০০৩ সালে দেশটির সামরিক শাসক জেনারেল মোশাররফকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, ইমরানের মতো তিনিও বেঁচে গিয়েছিলেন। রাওয়ালপিন্ডিতে তার অতি সুরক্ষিত কনভয় একটি সেতু অতিক্রম করার কয়েক মিনিট পরই সেখানে তীব্র বিস্ফোরণে সেতুটি উড়ে গিয়েছিল। তার গাড়িতে একটি জ্যামিং ডিভাইস থাকায় তিনি রক্ষা পেয়েছিলেন। ওই জ্যামিং ডিভাইস দূর-নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ রুখে দিয়েছিল।

বেনজীর ভুট্টো: পাকিস্তানের দুবারের প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভুট্টোকেও হত্যার শিকার হতে হয়। ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচনী সমাবেশ শেষে সভাস্থল ত্যাগ করার পর গাড়িতে আরোহণের পর মুহূর্তে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন বেনজীর ভুট্টো। তার প্রাণনাশের হুমকি ছিল, কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও খুন হন তিনি।

ইমারন খান: পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকেও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল বলে এক জনসভায় বলেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ চলাকালে ইমরানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। তবে ইমরান খানের হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ হামলা পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। হামলার পরপরই পিটিআই সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেন, যা সামনে আরও সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর তা হলে দেশটির সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে। সেনাবাহিনী সামরিক আইন জারি থেকে ক্ষমতা গ্রহণ যেকোনো একটি বেছে নিতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।