জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে বায়ুদূষণ রোধে এবার শক্ত পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বায়ুদূষণের দায়ে শিল্প কলকারখানাগুলোর ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থার বিধান রেখে নতুন আইন প্রস্তাব করেছে জোটটি। শুধু বায়ুদূষণ নয়, শিল্পাঞ্চলের বিষাক্ত বর্জ্যে পানির দূষণ রোধেও নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। এরই মধ্যে ইইউর পক্ষ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি আইন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বছরের পর বছর ধরে বিশ্ব নেতারা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়ালেও, নেই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। জলবায়ু চুক্তির বাস্তবায়ন তো দূরে থাক, উল্টো প্রতিনিয়ত বিশ্বনেতাদের দেয়া নানা প্রতিশ্রুতি আর অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। এতে ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে বিশ্ব, বাড়ছে জলবায়ু বিপর্যয়ের আশঙ্কা।
নতুন পদক্ষেপের আওতায় কারখানাগুলোতে দূষিত বায়ু নির্গমনের মাত্রা বেঁধে দেয়া এবং ওষুধ ও কসমেটিকস কারখানাগুলোকে পানিদূষণের দায়ে এর পরিশোধন বাবদ মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ২০৩০ সাল নাগাদ বায়ুদূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ তা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ইইউভুক্ত দেশগুলোর প্রতি বাধ্যবাধকতা জারির বিধানও প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন আইনে। সম্প্রতি ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জোটের জলবায়ুবিষয়ক প্রধান ভার্জিনিজাস সিনকেভিসিয়াস।
ভার্জিনিজাস বলেন, ‘বায়ুদূষণ পরিবেশ ও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি শুধু আমাদের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে বয়স্ক ও শিশুরা। আর তাই বায়ুদূষণ রোধে আমাদের আরও বেশি সচেষ্ট হতে হবে, পরিকল্পনামাফিক কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী বায়ুদূষণের কবলে পড়ে প্রতিবছর ৩ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। গেল দশ বছরে ইউরোপের বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হলেও, কিছু দেশে দূষণের মাত্রা এখনও জোটের বেঁধে দেয়া মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়ার হার দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিশ্বনেতারা, তা থেকে এখনও অনেক দূরে বিশ্ব। এভাবে চলতে থাকলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ তা ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে পৌঁছাবে বলেও সতর্ক করে দেন তারা।