ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হলেন গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ মল্লিকার্জুন খাড়গে। প্রায় ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুরকে হারিয়েছেন তিনি। ২৪ বছর পর কোনও অ-গান্ধী হিসেবে তিনি কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেবেন।
কংগ্রেসের সেন্ট্রাল ইলেকশন অথরিটি (সিইএ) জানিয়েছে, মোট ৯৩৮৫টি ভোটের মধ্যে ৭৮৯৭ ভোট পেয়েছেন খাড়গে, প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুর পেয়েছেন ১ হাজার ৭২ ভোট। ৪১৬টি ভোট বাতিল হয়ে গিয়েছে।
এদিকে হার স্বীকার করলেন শশী থারুর। নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার আগেই শশী থারুর টুইট করে লেখেন, জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া অত্যন্ত গর্বের ও দায়িত্বের। আমি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে এই দায়িত্ব প্রাপ্তির জন্য শুভেচ্ছা জানাতে চাই। এক হাজারেরও বেশি সদস্যের সমর্থন পাওয়াও অনেক বড় সাফল্য।
এরআগে গত ১৭ অক্টোবর সোমবার শান্তিপূর্ণভাবেই দেশজুড়ে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলে। দিল্লিতে কংগ্রেস সদর দফতরে বুধবার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ভোট গণনা দুপুর ১টার দিকে শেষ হয়।
এদিকে ফলাফল ঘোষণার আগেই কর্ণাটকে এক সংবাদ সম্মেলনে খাড়গেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন রাহুল গান্ধী।
কংগ্রেসের সেন্ট্রাল ইলেকশন অথরিটি (সিইএ) তথ্য বলছে, দেশে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল ৩৬টি। বুথের সংখ্যা ৬৭। প্রতি ২০০ ভোটার পিছু একটি করে বুথ নির্ধারিত করা হয়। গোপন ব্যালটে হয় ভোটগ্রহণ। এই প্রথম বার ভোটদাতাদের কিউআর কোড-সহ পরিচয় পত্র দেয় সিইএ। পরিচয় পত্র ছাড়া ভোট দেওয়া যায়নি। ভোট গ্রহণের জন্য ৯৪৩ জন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলের পরপর দুটি পরাজয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করলে সোনিয়া গান্ধী অস্থায়ীভাবে দলের নেতৃত্ব দিতে সম্মত হওয়ার তিন বছর পর এই নির্বাচন হয়।
দীর্ঘ ২ দশক পর অনুষ্ঠিত এই সভাপতি নির্বাচন ঘিরে একাধিক জল্পনা, জলঘোলা হয়েছে। অবশেষে এই লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও শশী থারুর। এদিকে এই প্রথম সভাপতি নির্বাচন থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে গান্ধী পরিবার। গান্ধী পরিবারের সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা এই নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ২৪ বছর পর কোনও অ-গান্ধী কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেবেন। বিরোধীদের ‘পরিবারতান্ত্রিক দল’-র কটাক্ষের পরই এই প্রথম কোনও গান্ধীই এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।