যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে ভাসমান অভিবাসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত ছয় মাসে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ১৭ হাজারেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী নিউ ইয়র্ক শহরে এসে হাজির হয়েছেন। তাদেরকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষকে। এই পরিস্থিতিকে সংকটজনক অভিহিত করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত টেক্সাস, আরিজোনা ও ফ্লোরিডা রিপাবলিকান শাসিত অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে নিউ ইয়র্কে অভিবাসন আবেদন পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অঙ্গরাজ্যগুলো সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অভিবাসন প্রত্যাশীদের পাঠানো শুরু করে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশী হাজির হওয়ার পর হোয়াইট হাউসের সঙ্গে রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্যগুলোর মতভেদের জের ধরে এ ঘটনা ঘটছে।
নিউ ইয়র্কের মেয়র অ্যাডামস শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি বাস অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে নগরীতে এসে হাজির হচ্ছে। এখন নগরীর আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর প্রতি পাঁচ জন বাসিন্দার একজন অভিবাসন প্রত্যাশী। যারা আসছেন তাদের মধ্যে অনেক পরিবারে স্কুলে যাওয়ার বয়সী শিশু আছে আর তাদের অনেকেরই জরুরি চিকিৎসা সেবা দরকার।
অভিবাসন প্রত্যাশীরা এই হারে আসতে থাকায় চলতি অর্থবছরে নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, এই ব্যয় বহনের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
মেয়র অ্যাডামস আরও বলেন, নিউ ইয়র্কবাসী ক্ষুব্ধ। আমিও ক্ষুব্ধ। আমরা এটা চাইনি। নিউ ইয়র্ক তার সামর্থ্যরে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ‘অন্যরা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার উদ্দেশ্যে’ নিউইয়র্ক নগরীর সামাজিক বিভাগকে চাপে ফেলছে। এই চাপ থেকে উদ্ধার এবং অর্থিক বিষয়টির দিকে নজর রেখে এ বিষয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও অঙ্গরাজ্যের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
টেক্সাস, আরিজোনা ও ফ্লোরিডা- এই তিনটি অঙ্গরাজ্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন এলাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের চাপ কমাতে এ কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে সীমান্তবর্তী মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তগুলো অতিক্রম করে প্রবেশ করতে থাকা অভিবাসন প্রত্যাশীদের সংখ্যা কমাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যেন আরও কিছু করে সে বিষয়ে চাপ বাড়াতেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।