বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করেনি রোহিত রাম (২০) নামের যুবক। লুকিয়ে দু’জনের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ চলছিল। আর সেই ‘অপরাধেই’ ওই যুবককে কাটারির কোপ মেরে, বাঁশপেটা করে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল মেয়ের মা-বাবার বিরুদ্ধে।
চুঁচুড়ার কালীতলার এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চুঁচুড়ার কালীতলায় থাকতেন রোহিত রাম বছর দুই আগে এলাকারই ঝিঙে পাড়ার এক নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। রোহিত ঝিঙে পাড়ার এক মুদিখানা দোকানে কাজ করত। সেখানেই ওই নাবালিকার সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্পর্কে জড়ানোর পর রোহিত ওই নাবালিকাকে নিয়ে তিনবার পালিয়ে গিয়েছিল। প্রতিবারই পুলিশের সাহায্যে মেয়েটির পরিবার তাকে ফিরিয়ে আনে। গেল সেপ্টেম্বর মাসে মেয়েটিকে নিয়ে ওই যুবক বিহারের সমস্তিপুরে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের ফিরিয়ে আনার পর মেয়েটিকে সরকারি হোমে রাখা হয়।
ওই ঘটনার পর রোহিতকে পাড়ায় ঢুকতে নিষেধ করেন নাবালিকার মা-বাবা। কিন্তু সেই নিষেধ না শুনে ওই যুবক শুক্রবার ঝিঙে পাড়ার একটি আটাকলে কাজে যায়। রাত ৯ টা নাগাদ ওই নাবালিকার মা-বাবা আচমকাই সেই আটাকলে কাটারি, বাঁশ নিয়ে রোহিতের উপর চড়াও হয়। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। রোহিত রামকে বাঁশপেটা করা, কাটারির কোপ মারার ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায় ওই যুবকে কাটারি, বাঁশ দিয়ে বেধরক মারধোর করা হয়। স্থানীয়রা আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়।
পরে রাত ১২ টা নাগাদ রাস্তার ধার থেকে অচৈতন্য অবস্থায় রোহিতকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ছেলে রোহিতের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা ফুলকুমারী রাম। তিনি দাবি করেন, “ওদের মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক মেনে নেয়নি তাই ছেলেটাকে মেরে ফেলল।” বারণ করা সত্ত্বেও রোহিত ওই নাবালিকার সঙ্গে মেলামেশা করেনি বলে জানায় তার মা। তিনি ওই নাবালিকার মা-বাবার কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এদিকে অভিযুক্তদের সন্ধানে তাদের বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু বাড়ি বন্ধ করে সকলেই পালিয়েছে।