২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০১:৩৯:৩৩ অপরাহ্ন


তেল ও চিরুনি ব্যবহারের সুন্নাত ও নিয়মাবলী
ইব্রাহীম হোসেন সম্রাট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১০-২০২২
তেল ও চিরুনি ব্যবহারের সুন্নাত ও নিয়মাবলী ফাইল ফটো


তেল ও চিরুনি ব্যবহারের সুন্নাত ও নিয়মাবলী- প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা। আমাদের প্রিয় আক্কা মদীনা ওয়ালে মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) স্বভাবগতভাবে সীমাহীন উৎকৃষ্টতা পছন্দ করতেন । হুযুর (সাল্লালাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) আপন পবিত্রতম শির ও দাড়ি মুবারকে তেল ব্যবহার করতেন, চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতেন। মাথার মধ্যখানে সিঁথি কাটতেন।

এলােমেলাে চুল, যেমনিভাবে আজকাল কেউ কেউ রেখে থাকে, হুযুর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) খুব অপছন্দ করতেন।

সুতরাং এখন তেল ও চিরুনি ব্যবহারের সুন্নাত ও নিয়মাবলী বর্ণনা করা হচ্ছেঃ 

মাথায় তেল ব্যবহার করা সুন্নাতঃ

হযরত সাইয়্যেদুনা নস আনাস ইবনে মালিক (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বলেন, “সরকারে মদীনা, রাহাতে ক্বলব ও সীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সালিহী ওয় সাল্লাম) পবিত্রতম মাথায় বেশী তেল ব্যবহার করতেন, বেশীরভাগ সময় দাড়ি মুবারককেও চিরুণী দিয়ে আঁচড়াতেন । আর বেশীর ভাগ সময় । মাথাবন্দও ব্যবহার করতেন। এমনকি পবিত্রতম শিরের উপর বাঁধার বরকতময় কাপড় তৈলাক্ত কাপড়ের মতাে (চর্বিযুক্ত হয়ে যেতাে । (তিরমিযী শরীফ)

পাগড়ির নীচে মাথাবন্দ বাঁধা চাইঃ

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের সরকার, মদীনার তাজদার, আমরা অসহায়দের মদদগার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর মেজাজ মুবারক যেহেতু সীমাহীন উৎকৃষ্টতা ছিলাে, সেহেতু হুযুর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) যখন শির মুবারকে তেল লাগাতেন তখন নিজ পাগড়ি মুবারক এবং টুপি শরীফ ও অন্যান্য কাপড়কে তেলের প্রভাব থেকে বাঁচানাের জন্য পবিত্রতম শিরের উপর একটা কাপড় জড়িয়ে নিতেন ।

আর যেহেতু তেল মুবারকের ব্যবহার খুব বেশী হতাে, সেহেতু ওই বরকতময় কাপড় তেল শরীফ মিশ্রিত হয়ে যেতাে। হযরত সাইয়্যেদুনা ইমাম তিরমিযী (রাহমাতুল্লাহি তাআলা আলাইহি) তার শামাইলে তিরমিযীতে মাথাবন্দ বাঁধার সুন্নাত শীর্ষক একটা অধ্যায় নির্ণয় করেছেন। কিন্তু ক্বোরবান হয়ে যান! (আর্শ্চষের বিষয়) যে  হুযুর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এর ঐ বরকতময় কাপড় না অপরিস্কার হতো, না তাতে উকুন আসতো। পূর্ববর্তী হাদিস হতে একথা বুঝা গেলো যে তেল ঢালার পর টুপি ও পাগড়ির নিচে কোন কাপড় কিংবা রুমাল রাখা অথবা বাঁধা সুন্নাত।

যেসব ইসলামী ভাইয়ের মাথা উপর চুল আছে, তাদের উচিত হচ্ছে- ওই চুল গুলোর যত্ন নেয়া। অর্থাৎ সেগুলোতে তেল ব্যবহার করবেন ও চিরুনী দিয়ে আচড়াবেন।

প্রত্যহ আঁচড়ানাে কেমন?

হযরত সাইয়্যেদুনা আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বর্ণনা করেছেন, সরকারে মদীনা, রা-হাতে ক্বলব ও সীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) প্রত্যহ আঁচড়াতে নিষেধ করেছেন। (তিরমীযী ও আবু দাউদ)

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! প্রত্যহ আঁচড়াতে আমাদের প্রিয় সরকার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) যে নিষেধ করেছেন, তার অর্থ কিছুসংখ্যক ইমামের মতে, এমনি করা মাকরূহ-ই- তানযীহী’ । (অর্থাও অপছন্দনীয় মাত্র !) যদি কেউ প্রত্যহ আচঁড়ায়ও তবে গুনাহগার হবেনা।

আর এ মাকরূহ হওয়াও ওই অবস্থায়, যখন চুল ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু যদি চুল বারবার এলােমেলাে হয়ে যায়, কিংবা অন্য কোন প্রয়ােজন হয়, তবে বারংবার চিরুণী ব্যবহার করলে কোন ক্ষতি নেই । এ নির্দেশ পুরুষদের জন্য। যেমন, এ হাদীসে পাকের প্রসঙ্গে ‘আনওয়ারে গাউসিয়া’য় উল্লেখ করা হয়েছে, “যেহেতু এটা নারীদের অভ্যাস যে, তারা সবসময় নিজেদের চুল আচঁড়ায়, পাট্টি করতে থাকে, এ কারণে পুরুষদেরকে এ কাজে মশগুল হতে নিষেধ করেছেন।”

সারকথা হচ্ছে – মাথার চুলে শিথিলতা কিংবা অতিরঞ্জন করা উচিত নয়; অর্থাৎ না এমন করবেন যে, সবসময় চিরুনী নিয়ে চুলের পেছনে লেগে থাকবেন, না এতাে বেপরােয়া হয়ে যাবেন যে, আপনার চুল এলােমেলাে। ও বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকবে। কারণ, এলােমেলাে চুলকেওততা আমাদের প্রিয় সরকার আহমদে মুখতার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) অপছন্দ করেছেন।

দাড়ি শরীফে প্রত্যহ দু’বার চিরুণী ব্যবহার করা সুন্নাতঃ

দাড়ি শরীফেতে প্রতিদিন চিরুনী ব্যবহারে কোন ক্ষতি নেই; বরং দিনে দু’বার দাড়ি শরীফকে আঁচড়ানাে খােদ আমাদের প্রিয় আকা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর মিষ্ট-প্রিয় সুন্নাত। যেমন, হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদুনা ইমাম মুহাম্মদ গাযালী (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) “ইহইয়াউল উলুম’-এ উদ্ধৃত করেছেন, “আমাদের প্রিয় আক্বা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) আপন দাড়ি মুবারকে প্রত্যহ দু’বার চিরুনী ব্যবহার করতেন। হযরত শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) ‘আশ’আতুল লােম’আত’ -এ বলেন,“ওযূর পর দাড়ি আচঁড়ানাের ফলে আর্থিক সংকীর্ণতা দূর হয়ে যায়।”

মাথায় তেল ঢালার পদ্ধতিঃ 

মাথায় তেল ঢালার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে নেয়া উচিত, নতুবা সত্তরজন শয়তান মাথায় তেল ঢালার মধ্যে শরীক হয়ে যায়। সুতরাং প্রথমে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে তেলের শিশি ইত্যাদি থেকে বাম হাতের তালুতে অল্প তেল ঢালবেন। তারপর প্রথমে ডান চোখের আব্রুতে তেল লাগাবেন। তারপর বাম চোখের। তারপর ডান চোখের পলকে, তারপর বাম চোখের পলকে। এখন পুনরায় বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ বলে মাথায় তেল ঢালবেন।

(খােলাসা-ই-উসুওয়া-ই-হাসানাহ , শামাইলে রসূল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) সরকারে মদীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) যখন পবিত্রতম শির মুবারকে তেল ঢালতেন, তখন কপালের দিক থেকে আরম্ভ করতেন। তাছাড়া, যখন দাড়ি মুবারকে তেল লাগাতেন, তখন প্রথমে ওই অংশ থেকে আরম্ভ করতেন, যা গর্দান শরীফের সাথে মিলিত ।

সরকারে দু’আলমের একটা মিষ্ট সুন্নাত!। প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আমাদের প্রিয় আক্কা মদীনা ওয়ালে মােস্তফা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর একটা মিষ্ট-প্রিয় সুন্নাত এটাও রয়েছে যে, চাই সফরে থাকুন, কিংবা নিজ বাসস্থানে থাকুন, শােয়ার সময় এ

সাতটা জিনিষ হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) আপন শিরপ্রান্তে রাখতেনঃ

১. তেল মুবারকের বােতল শরীফ,

২. চিরুনী শরীফ,

৩. প্রিয় প্রিয় সুরমাদানি,

৪. প্রিয় প্রিয় কাঁচি, ৫. মিস্ওয়াক শরীফ,

৬. আয়না মুবারক এবং

৭. শির মুবারক

ইত্যাদি চুলকানাের জন্য কাঠের প্রিয় প্রিয় চিকন ধরণের শলা।

চিরুনী ব্যবহারের ফযীলতঃ

১. হযরত সাইয়্যেদুনা উবাই ইবনে কাআব (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) থেকে বর্ণিত, তাজদারে মদীনা সুরুরে কলব ও সীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর আলীশান ফরমান, “যে ব্যক্তি প্রত্যহ রাতে আপন মাথা ও দাড়ি আঁচড়ায় সে বিভিন্ন ধরণের বালা-মুসীবত থেকে নিরাপদে থাকে এবং তার বয়স বৃদ্ধি পায়। ”(নুযহাতুল মাজালিস)

২. হযরত সাইয়্যেদুনা মাওলা আলী (কামাল্লাহু ওয়াজহাহুল। করীম) থেকে বর্ণিত, মদীনা ওয়ালে মােস্তফা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর আলীশান ফরমান,“চিরুনী ব্যবহার করাে! কেননা, এর ফলে আর্থিক অসচ্ছলতা দূরীভূত হয়ে যায়। তাছাড়া, যে সকালে চিরুনী ব্যবহার করে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপদে থাকে। (নুযহাতুল মাজালিস)

৩ . অন্য এক স্থানে আমাদের সরকার, দু’জাহানের তাজদার, হাবীবেপরওয়ার দিগার, শাফি’-ই-রােযে শুমার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর আলীশান এরশাদ, “যে ব্যক্তি নিজের আব্রুর উপর চিরুনী বুলিয়ে নেয়, সে মহামারী রােগ থেকে নিরাপদে থাকে। (নুযহাতুল মাজালিস)।

৪. হযরত আল্লামা আবদুর রহমান সারী (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) বর্ণনা করছেন, “যে ব্যক্তি রবিবার চিরুণী দিয়ে আঁচড়ায়,আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তাকে বেশী পরিমাণে খুশী দান করেন। সােমবার চিরুণী ব্যবহারকারীর প্রয়ােজন মিটানাে হয়, মঙ্গলবার করলে আল্লাহ্ (আযযা ওয়া জাল্লা) তার জন্য সবকিছু সহজ করে দেন, বুধবার করলে নিমাত বাড়িয়ে দেয়া

হয়, বৃহস্পতিবার করলে নেকীগুলােতে বরকত দান করা হয়, জুম’আহবার করলে আনন্দ বৃদ্ধি করা হয় এবং শনিবার চিরুণী ব্যবহারকারীর অন্তরকে আল্লাহ্ আযযা ওয়া জাল্লা মন্দ থেকে পবিত্র করে দেন। (নুযহাতুল মাজালিস)

আঁচড়ানাে ডান দিক থেকে আরম্ভ করা সুন্নাত।

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা। আমাদের প্রিয় আক্কা মদীনা ওয়ালে মােস্তফা, শবে আসরা কে দুলহা, শাফি’-ই রােযে জাযা, সুলতানে আম্বিয়া, মাহবুবে কিবরিয়া (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক সম্মানিত কাজ ডান দিন থেকে আরম্ভ করতেন। যেমন, তিরমিযী শরীফে আছে, হযরত সাইয়্যেদাতুনা আয়েশা সিদ্দীক্বা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা) বর্ণনা করেন, সরকারে মদীনা রা-হাতে কলব ও সীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) ডান দিক থেকে ওযূ করতে পছন্দ করতেন, অনুরূপভাবে চিরুনীর ব্যবহারও ডান দিক থেকেই করতেন।

তাছাড়া, বরকতময় পাদুকাযুগলও যখন পরতে ইচ্ছা করতেন, তখন প্রথমে ডান পা শরীফে পাদুকা শরীফে পরতেন।”

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা। আমাদের প্রিয় আক্বা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) ডান দিক থেকে ওযু করতে পছন্দ করতেন। এর অর্থ এ যে, ওযু করার সময় প্রথমে বরকতময় ডান হাত ধুতেন, তারপর বাম হাত। অনুরূপভাবে, পা। মুবারকও এ নিয়মেই ধুতেন। তাছাড়া, এ হাদীসে পাকে চিরুনী ব্যবহার ও বরকতময় পাদুকা দু’টির ক্ষেত্রেও ডান দিক থেকেই আরম্ভ করার কথা বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ পবিত্রতম শির ও দাড়ি মুবারককে যখন চিরুনী দিয়ে আঁচড়াতেন, তখন প্রথমে ডান দিক থেকে আরম্ভ করতেন, তারপর বাম দিক।

অনুরূপভাবে, বরকতময় পাদুকা দু’টি পরার সময়ও প্রথমে পবিত্র ডান পা পবিত্র পাদুকায় প্রবেশ করাতেন, তারপর বাম কদম শরীফ। শুধু এ তিনটি কাজই সীমাবদ্ধ নয়; বরং যত সংখ্যক সম্মানজনক ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে, হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) ডান দিক থেকে শুরু করতে পছন্দ করতেন।

সুতরাং পােশাক পরিধান করা, মসজিদে প্রবেশ করা, মাথার চুল কিংবা গোঁফ ইত্যাদি কাটা বা ছাঁটা, মিস্ওয়াক করা, নখ কাটা, চোখে সুরমা লাগানাে, কাউকে কিছু দেয়া, কারাে নিকট থেকে নেয়া এবং পানাহার ইত্যাদি কাজ ডান হাতে কিংবা ডান দিক থেকে করা সুন্নাত। ইস্তেঞ্জা (শৌচকর্ম) বাম হাতে করা, পায়খানা ও গােসলখানায় প্রবেশ করার সময় প্রথমে বাম পা প্রবেশ করানাে, পােশাক খুলে ফেলার সময় প্রথমে বাম হাত থেকে শুরু করা, জুতাে খােলার সময় বাম পা থেকে শুরু করা সুন্নাত।

আয়না দেখা সুন্নাতঃ

আমাদের প্রিয় আক্বা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাতীর দাঁতের চিরুনী ছিলাে। হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) দাড়ি মুবারকে কখনাে কখনাে পানি লাগিয়েও আঁচড়াতেন।

শামাইলে রসূল (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকারে মদীনা রা-হাতে কুলব ও সীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) দাড়ি মুবারক আঁচড়ানাের সময় আয়নার মধ্যে নিজের নূরানী চেহারা দেখতেন। আর যখন আয়নার মধ্যে নিজের চেহারা মুবারক দেখতেন তখন এ

দো’আ করতেনঃ

اللهم حسنت خلقي فحسین خلقي.

অর্থ : হে আল্লাহ (আযযা ওয়া জাল্লা)! তুমি আমার গড়নকে সুন্দর করেছে, আমার চরিত্রও ভালাে করে দাও। নিঃসন্দেহে, এ দো’আ আপন গােলামদের শিক্ষা দেয়ার জন্যই, যাতে তারা নিজেদের চরিত্রকে সংশােধন করার জন্য দো’আ করতে থাকে।

নতুবা আমাদের সরকারে আলম-মদার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)- এর উন্নত চরিত্র সম্পর্কে কী বলার আছে? হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর চরিত্র-সৌন্দর্যের কোরআন মজীদেই চর্চা রয়েছে।

تیرے خلق کو حق کے عظیم کا تیری خلق کو حق نے جمیل کا

کوئی تجھ سا ہوا ہے نہ ہو گا شهاب تیرے خالق حسن ادا کی قسم

(حدق بکش)

উচ্চারণ ঃ তেরে খুলকূ কো হক্ নে আযীম কাহা তেরী খিলক্ কো হক্ নে জমীল কাহা

কুঈ তুঝ সা হুয়া হ্যায় না হােগা শাহা! তেরে খালেকে হুসনে আদা কী কসম।

অর্থ ও আপনার চরিত্রকে মহান রব ‘মহান’ বলেছেন, আপনার গড়নকে মহান, রব ‘সুন্দর’ করেছেন। ওহে শাহানশাহে দু’আলম! (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) আপনার সুন্দর কাজগুলাের স্রষ্টারই শপথ।

হে আমাদের প্রিয় আল্লাহ্ (আয্যা ওয়া জাল্লা) আমাদেরকে সুন্নাত অনুসারে নিজের চুল ও দাড়িতে তেল ও চিরুনি ব্যবহার করার তাওফীক দান করুন!আমীন বিজাহিন্নবিয়্যিল আমীন (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)।

تیل کی بوند یں ٹپکتی نہیں بالوں سے رضا

صبح عارض پر لٹاتے ہیں ستارے گیسو (حدائق بخشش)

উচ্চারণ ও তেল কী বৃদে টপকতী নেহী বাসে রযা সুবহে আরিয পেহ্ লুটাতে হ্যাঁয় সেতারে গেসাে (হাদাইকে বখশিশ)

অর্থঃ ওহে রেযা! চুল মুবারকগুলাে থেকে তেলের ফোঁটা টপকে পড়ছেনা; বরং শির মুবারকের চুল শরীফগুলাে সকালরূপী চেহারার উপর সেতারা লুটাচ্ছে।