২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১২:২৬:৩৪ অপরাহ্ন


রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ দুই লেনের স্থলবন্দর মহাসড়ক যেন দুর্ঘটনার ফাঁদ
মঈন উদ্দীন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৯-২০২২
রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ দুই লেনের  স্থলবন্দর মহাসড়ক যেন দুর্ঘটনার ফাঁদ ফাইল ফটো


দুইলেনের রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে প্রায় ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবহন। এতে করে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ২০২২ সালের জানুয়ারী থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মহাসড়কের গোদাগাড়ী এলাকায় ৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস।

সর্বশেষ গোদাগাড়ী সদরে ১৩ সেপ্টেম্বর ভূমি রেজিষ্ট্র অফিসের সামনে যাত্রীবাহী মিনিবাস তিন চাকার ইজি বাইকের মুখোমুখী সংর্র্ঘষ ঘটলে ছয় আহত হয়। ইজি বাইকের চালক তারেক(২৮) হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নির্মাণ শ্রমিক তারেক ইজি বাইকটি প্রথমবারের মত চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় নিহত হয়।

এর আগে ১২ সেপ্টম্বর গোদাগাড়ী উপজেলার রেলগেট এলাকায় রাজশাহী-গোদাগাড়ী সড়কে সোমবার সকালে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি ট্রাক দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে একটি ট্রাকে আটকা পড়া চালক রবিউল ইসলামকে (২৮) গাড়ির সম্মুখভাগ কেটে বের করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা খন্দকার আকবর আলী বলেন, গোদাগাড়ী সড়কে এ বছর এখন পর্যন্ত ৭০টি দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে তাঁদের কাছে। ২০১৮ সালের ১৩ মে থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ওই সড়কে দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছরের ২২ জুলাই সড়কটির দুর্ঘটনার চিত্র ছিল ভয়াবহ।

সেদিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক মহাসড়কের পাশে একটি মাংসের দোকানে ঢুকে পড়লে মারা যান দোকানি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রীকে মোটরসাইকেলের পেছনে নিয়ে রাজশাহী আসছিলেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা। বেপরোয়া গতির এক ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ওই দিন বিকেলে একটি মিনিবাস ও একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। রাতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হয়।

স্টেশন কর্মকর্তা খন্দকার আকবর আলী আরও বলেন,সড়কের বাঁক ও বেপরোয়া গতির কারণে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে উল্লেখ করে আকবর আলী বলেন,দুর্ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে ২০০ গজ পশ্চিমে বাঁক রয়েছে। বাঁক থেকে বের হয়ে এসে ইটের ট্রাক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী সিমেন্টের ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, প্রকৌশলী ও স্থানীয়দের ভাষ্য, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পণ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম, গোদাগাড়ীর টমেটো ও করিডরের গরু বহনকারী শত শত ট্রাক সারা দেশে যায় এ সড়ক দিয়ে। এ সড়কে পৌঁছাতে পৌঁছাতে চালকেরা ক্লান্ত হয়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। অনেক সময় রাজশাহীতে আসার পরে গাড়ির স্টিয়ারিং থাকে চালকের সহকারীর হাতে। ফলে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের বাড়ি, দোকানপাট বা বিপরীতমুখী যানবাহনকে ধাক্কা দেয়।

রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হাকিম বলেন,রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জ সড়কে বাঁকের সংখ্যা বেশি। মাত্র ৬ কিলোমিটারে ১৬ টি বাঁক রয়েছে। এসব বাঁকেই দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। এছাড়া চার লেনের রাস্তা থেকে ওই এলাকায় দুই লেনের রাস্তা শুরু হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।