২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৫:১৭:১৪ অপরাহ্ন


নিহত হিমেলের মা পাবেন মাসে ৩৫ হাজার, চিকিৎসা ভাতা পাবেন আজীবন
রাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০২-২০২২
নিহত হিমেলের মা পাবেন মাসে ৩৫ হাজার, চিকিৎসা ভাতা পাবেন  আজীবন মাহমুদ হাবিব হিমেল


ক্যাম্পাসে ট্রাকচাপায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্র মাহমুদ হাবিব হিমেলের মায়ের ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য।  

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে আয়োজিত শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের আলোচনা সভায় উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার এ কথা বলেন।

হিমেলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা হিমেলের মায়ের কাছে ৫ লাখ টাকার চেক দিয়েছি। তার মায়ের নামে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছি। হিমেলের পরিবারের জন্য প্রতি মাসে তার মায়ের অ্যাকাউন্টে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

এর আগে মাহমুদ হাবিব হিমেলের মাকে আজীবন চিকিৎসা ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, হিমেলের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। নাটোরে তার নানার বাড়িতে গিয়ে চেক হস্তান্তর করেছি। ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ধাপে ধাপে আরও সহযোগিতা করা হবে। হিমেলের মায়ের আজীবন চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। এছাড়া আহত ছাত্রের চিকিৎসার সব খরচও বিশ্ববিদ্যালয় দেবে।

সাবাস বাংলাদেশ মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১০টি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- নিহতের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আহত শিক্ষার্থী রায়হান প্রামাণিকের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, নির্মাণাধীন অ্যাকাডেমিক ভবন ও ওই সড়ক হিমেলের নামে নামকরণ করা এবং সড়কে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার করা, সড়ক ঠিক না করা পর্যন্ত সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কাজলা, মেইন গেট ও বিনোদপুর গেটে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মতামত নেওয়া, বোটানিক্যাল গার্ডেনের অভ্যন্তরের বন্ধ সড়কটি পুনরায় চালু করা এবং আহত রিমেলের নষ্ট হওয়া মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন অ্যাকাডেমিক ভবনের নাম হিমেলের নামে করা হবে। হবিবুর হলের পাশের ওই সড়কটিও তার নামে দেওয়া হবে। তাছাড়া ঘটনাস্থলে হিমেলের একটি স্থায়ী স্মৃতিফলক তৈরি করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

উপাচার্য আরও বলেন, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ড্রাইভার ও হেল্পারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রক্টরকে অব্যাহতি দিয়েছি আমরা।

তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নতুনভাবে লাইট লাগানোর কাজ শুরু করেছি। বহিরাগতদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স বজায় থাকবে। বহিরাগত দেখলে তোমরা সাথে সাথে প্রক্টরকে জানাবা। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রেখেছি। এখন থেকে রাত ১২ থেকে সকাল ৬টার মধ্যে নির্মাণসামগ্রী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে।  

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, অনুষদের ডিনসহ বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহীর সময় /এএইচ