২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১০:৪২:২৪ অপরাহ্ন


বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সব সময় সহায়তা করবে
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৯-২০২২
বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সব সময় সহায়তা করবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা যে, বাংলাদেশ সর্বদা বৈশ্বিক শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে। জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি রক্ষা কার্যক্রমে আমাদের সেনাবাহিনীপ্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা এটি বজায় রাখতে চাই।

গতকাল সোমবার রাজধানীর র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে ৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিজ ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস) ২০২২-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও

যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে এ আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করেছে। ২৭টি দেশ এতে অংশ নেয়। খবর বাসসের।

শান্তি সহায়তা কার্যক্রমে অবদানের জন্য বাংলাদেশ আজ বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘ মিশনে এবং বিশ্বের যে কোনো স্থানে দেশ ও বিশ্বশান্তির জন্য সর্বদা প্রস্তুত। তিনি বলেন, যে কোনো সংঘাত বা সংকট বিশ্বের প্রতিটি জাতিকে প্রভাবিত করে। এটি রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্ত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের পররাষ্ট্র্রনীতির সারমর্ম উচ্চারণ করেছিলেন এভাবে- 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়।' রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিশ্বনেতাদের সৎ ও শান্তিপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা সব সময় আমাদের বৈদেশিক নীতি থেকে শক্তি নিয়ে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছি।

উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা বিশ্বের প্রায় সব দেশের প্রধান নীতিগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি দেশগুলোকে টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী সহযোগিতার দিকে নিয়ে যায়। এটি যোগাযোগ, সংলাপ এবং শীর্ষ সম্মেলনের মতো বেসামরিক ও সামরিক কূটনৈতিক চ্যানেলের পথও প্রশস্ত করেছে। তিনি বলেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বন্ধুত্ব, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইপিএএমএস সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমি মনে করি, এই ফোরামের মাধ্যমে মিথস্ট্ক্রিয়া বাস্তবসম্মত বহুপার্শ্বিক পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করতে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এই সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য অংশগ্রহণকারী সব দেশকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। 'প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ এককভাবে মোকাবিলা সম্ভব নয়' :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও অর্থ পাচারের পাশাপাশি সহিংস চরমপন্থা এবং প্রযুক্তিনির্ভর অন্যান্য অপরাধ দমনে পুলিশের ডিজিটালাইজেশন একটি চমৎকার উপায় হতে পারে। বর্তমানে এসব অপরাধের কারণে বিশ্বজুড়ে পুলিশের দায়িত্ব পালনে তীব্র চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। আজকের বিশ্বে একা কোনো দেশের পক্ষে এসব মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই এসব সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সুসংহত করার কোনো বিকল্প নেই।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে রাজধানীর একটি হোটেলে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ আয়োজিত ১১তম বার্ষিক 'ইন্টারপা' সম্মেলন ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সহিংস চরমপন্থা এবং প্রযুক্তিভিত্তিক বহুজাতিক অপরাধ দমনে চাহিদা ও ফলাফলভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ইন্টারপা সদস্যদের সম্মিলিত ইচ্ছা ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্বের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের ফলে সারাবিশ্বে এর সুদূরপ্রসারী অস্থিতিশীল প্রভাব পড়ছে। নতুন চ্যালেঞ্জগুলো সাইবার অপরাধ, মুদ্রা পাচার, মুদ্রা জাল, সন্ত্রাসী অর্থায়ন এবং অন্যান্য আধুনিক হুমকিরূপে আবির্ভূত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, মহাদেশজুড়ে সদস্য পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পেশাদারদের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারপার এই অনন্য সম্মেলন অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, আমাদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের এ ধারায় বাংলাদেশ পুলিশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে পুলিশের মধ্যেও উল্লেখযোগ্য গুণগত পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ পুলিশ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা সফলভাবে মোকাবিলায় তাদের সক্ষমতা ও সহিষ্ণুতা প্রমাণ করেছে।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকতার হোসেন, ইন্টারপার প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইলমাজ কোলাক এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক ও অধিবেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ বক্তব্য দেন।