গত ১০ বছরে রেলের উন্নয়নে খরচ হয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। অথচ রেলের তথ্য বলছে, দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ রেললাইনই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, কমছে ট্রেনের গতি। এখনই লাইন সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে মুখ থুবড়ে পড়বে রেল। তবে রেলওয়ের দাবি, নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকায় রেললাইনের যে করুণ দশা তাতে মনে হতে পারে এই বুঝি উল্টে গেল ট্রেন। রেললাইন উঁচু নিচু আর আঁকাবাঁকা হওয়ায় লাইন থেকে ছিটকে পড়ার এমন ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রেন।
বরমী বাজারেই অন্তত ১০টি এমন স্পট আছে যেখানে ট্রেনের ভারে প্রায় ১ ফুট মাটির নিচে দেবে যায় রেললাইন। ফলে যাত্রী তো বটেই, আতঙ্কে স্থানীয়রাও।
স্থানীয় একজন বলেন, গাড়ি যাওয়ার সময় আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। আবার মাঝেমধ্যে কাত হয়ে যায়। আবার রেলসহ উঁচু-নিচু হয়। ৫-৭ মাস আগে এই জায়গায় দুবার দুর্ঘটনা হয়েছে।
মাইলজুড়ে নেই পাথর। হাত দিলেই খুলে আসছে সংযোগ পয়েন্টের নাট-বল্টু। বেশিরভাগই ফিসপ্লেটই জং ধরে ক্ষয় হয়ে গেছে। লোহার পাতের সঙ্গে রেললাইনকে ধরে রাখার হুকগুলোও নেই। ৪০-৪৫ বছর আগের কাঠের স্লিপার পচে গেছে বহু আগেই।
স্থানীয় আরেকজন বলেন, লাইনের নাটগুলো একদ লুজ। এ ছাড়া ক্লিপ নেই, পাথর ও নেই। স্লিপারগুলো খেয়ে ভেঙে গেছে আবার কিছু পচেও গেছে।
ঝুঁকি বিবেচনায় শ্রীপুর সেকশনে ঘন্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে চালকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
গাজীপুর শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার হারুন-আর-রশিদ বলেন, কিছু জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সর্বনিম্ন গতি ২০ কিমি আছে শ্রীপুর ও রাজেন্দ্রপুরের মাঝে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে লাইন সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে মুখ থুবড়ে পড়বে রেলব্যবস্থা।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, একদিকে বিনিয়োগ করছেন অন্যদিকে রাস্তাগুলো ঝঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে পুরো রেলব্যবস্থা একটা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
মহাপরিচালক বলছেন, দ্রুত সংস্কার প্রকল্প হাতে নেয়া হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, আমরা সারা রেললাইনকে আধুনিকায়ন করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গত ৮ বছরে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।